স্টাফ রিপোর্টার,ময়মনসিংহঃ- ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মনসুর আহমেদের নির্দেশনায় এসআই পলাশচন্দ্র রায়, মোস্তফা রুবেল ও এসআই হানিফ সহ পুলিশের একটি বিশেষ টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ত্রিশালের আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী মিনা গংকে গাজাসহ গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। ত্রিশাল থানাসূত্রে জানাগেছে অদ্য ২১ জুন সকালে ত্রিশাল পৌরসভা দরিরামপুর ৮ নং ওয়ার্ড সাকিন্থ মৃধাবাড়ী মোর সংলগ্ন বাইল্লা বাড়ি শাহজাহান এর বসতবাড়ির এল সিস্টেম ঘরের উত্তরপূর্বক কোণের রুম হতে মাদক ব্যবসায়ি মিনা কে ত্রিশাল থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এর আগে পৌরসভার ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কেরানী বাড়ি মোড় এলাকায় ভয়াবহ ভাবে বিস্তার লাভ করা মাদক ব্যবসা ও সেবনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিল স্থানীয় জনতা। “চলো যাই যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে” এ শ্লোগানকে ধারণ করে গত-১৭ জুন সকালে ঐ এলাকাবা ২ টি ওয়ার্ডের জনগনের যৌথ আয়োজনে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় রোডের কেরানী বাড়ি মোড়ে এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। বিক্ষোভ শেষে এলাকাবাসী একটি মিছিল বের করে চিহ্নিত মাদককারবারীদের বাড়ি ঘেরাও করে। বাড়িতে কাউকে না পেয়ে উত্তেজিত জনতা ভাঙচুরেরও চেষ্টা করে। পরে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।এসময় উপস্থিত বিক্ষোভকারীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই মাদককারবারী মিনা খাতুন, তার ভাই মুক্তা মিয়া, শাহীনসহ আরও অন্তত দশজন ব্যক্তি এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক বেচাকেনা চালিয়ে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক দপ্তরে একাধিক বার অভিযোগ থাকার পরও প্রকাশ্যে গাজা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল মিনা গং। স্থানীয় শিক্ষার্থী নাদিম হোসেন বলেন, "পাঁচ বছর আগেও আমাদের এলাকা অনেক শান্তিপূর্ণ ছিল। অথচ এখন সহজলভ্য হওয়ায় অল্প বয়সের ছেলেরাও মাদক সেবন করে। এতে করে তারা বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে। গাজা ব্যবসায়ী মিনা, তার ভাই মুক্তা ও শাহীনসহ তাদের আরও কয়েকজন সহচর মাদক কেনাবেচায় জড়িত। এরকম চলতে থাকলে পুরো ত্রিশালের মানুষ মাদকাসক্ত হয়ে পড়বে। "আরেক স্থানীয় বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন সোহাগ বলেন, "মাদকের ভয়াবহতা বাড়ায় এলাকায় চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ বেড়েছে। এখানে প্রতিনিয়ত মাদক কেনাবেচা হচ্ছে। এটা এ এলাকার সকল জনগণ দেখতে পারছে। কেউ প্রতিবাদ করলে মিনা গং কৌশলে আক্রমণ করে তারা। পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়গুলো জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গাঁজাসহ দুই যুবককে আটকের পরও, ‘অল্প গাঁজা’ পাওয়ার অজুহাতে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ”মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “ত্রিশালের কেরানী বাড়ি মোড় এখন মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। যুবসমাজ ধ্বংসের পথে। চুরি, ছিনতাই, সহিংসতা বাড়ছে। প্রশাসন দেখেও দেখছে না।” বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, একটি দালালচক্রের আশ্রয়ে এই অবৈধ ব্যবসা চলছে, যার কারণে প্রশাসনও পদক্ষেপ নিতে দ্বিধায় ছিল। জানাগেছে বিক্ষোভ চলাকালে মিনার বাড়ীতে অভিযান চালিয়েছিল এস আই দেবলাল এর নেতৃত্বে থানা পুলিশের একটি টিম। মানববন্ধন শেষে ত্রিশাল বক্তারা মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে অবিলম্বে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে ছিলেন। এবিষয়ে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আহম্মদ বলেন এ বিষয়ে আগেও একাধিক বার অভিযান পরিচালনা করা হয়। আজ থানা পুলিশের একটি বিশেষ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ত্রিশালের আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী মিনা গংকে গাজাসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। এই অভিযানে জনগণের সার্বিক সহযোগিতা ছিল। কই সাথে তিনি আরো বলেন এ উপজেলা থেকে গাজা ব্যবসায়ীদের নির্মূল করতে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করা হবে।অপরদিকে ১২৩ পিস ইয়াবা সহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।