প্রতিবাদের মুখে রাস্তার নির্মাণ কাজ বন্ধ, ভোগান্তিতে গ্রামবাসী

- আপলোড সময়: ০৫:০০:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
- / ৯৯ বার পড়া হয়েছে

মোহাম্মদ সেলিম,স্টাফ রিপোর্টার:- ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রতিবাদের মুখে বন্ধ রয়েছে রাস্তার চলমান নির্মাণ কাজ। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রামবাসী। কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় কখনো ধুলো আবার কখনো কাদায় পায়ে হেঁটে চলতে হচ্ছে মানুষকে। বিষয়টি সমাধান করে পুনরায় রাস্তার কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছেন প্রশাসন। প্রায় একমাস ধরে বন্ধ রয়েছে উপজেলার চকরামপুর জিমি রোড কোনাবাড়ি ঠাডু পাড়া রোড ভায়া গণধখলা রোডের ৫০০ মিটার রাস্তার নির্মাণ কাজ। রাস্তাটির ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৬৭ লাখ টাকা। রাস্তার চলমান নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তির মধ্য দিয়ে কয়েক গ্রামের মানুষকে যাতায়াত করতে হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা আলাল উদ্দিনের বাধার কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে।সরেজমিন গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোনাবাড়ি মোড় পাকা রাস্তা থেকে ৫০০ মিটার কাচা রাস্তা কার্পেটিং করার কাজ শুরু করেন মেসার্স ইসতিয়াক আহমেদ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার সর্দার গোলাম ফারুক। কিন্তু মোড়ের পূর্বপাশে সরকারি হালট এবং পশ্চিম পাশে আলাল উদ্দিনের জায়গা। সরকারি হালটের মধ্যে পুকুর থাকায় রাস্তার শুরুর দিকে কিছু অংশের পুরো রাস্তা আলাল উদ্দিনের জায়গার মধ্যে পড়ে। এতে তিনি নির্মাণ কাজে বাধা প্রদান করলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেওয়া আলাল উদ্দিন বলেন, কয়েক গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে আমার জায়গা দিয়ে চলাচল করে আসছে তাতে কিছু বলিনি। এখন যখন মাটির রাস্তাটি স্থায়ীভাবে পাকা করা হচ্ছে তখন কয়েক মিটারের মধ্যে সরকারি হালট থাকতে পুরো রাস্তা আমার জমির ওপর দিয়ে নেওয়ার পায়তারা হচ্ছে। এতে করে আমার পাঁচ শতাংশের মত জমি চলে যাবে। তাঁর মূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা। কিন্তু তারা কোন ক্ষতিপূরণ দিবে না আমাকে। তাই ঠিকাদারকে বলেছি হালট দিয়ে রাস্তা নেয়ার জন্য। ঠিকাদার আমাকে হুমকি দিয়েছে জেলে ঢুকিয়ে সে নাকি রাস্তা করবে। সেটাই দেখতে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। এতে মানুষের কষ্ট হলেও আমার করার কিছু নেই। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, যেকোন রাস্তা সরকারের জমির মধ্য দিয়ে যাবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এখানে ব্যক্তি মালিকানা জায়গার মধ্য দিয়ে পুরো রাস্তা কেন করতে হবে। প্রশাসন ইচ্ছা করলেই পারে পুকুর ভরাট করে হালটের মধ্যে দিয়ে রাস্তা নিতে। মাওলানা আবুল কালাম নামে স্থানীয় আরেক বাসিন্দা বলেন, বাজারে যেতে ঘর থেকে বের হয়েই রাস্তা ধরতে হয়। প্রায় এক মাস ধরে কাজ বন্ধ থাকায় বৃষ্টি হলে কাদা এবং শুষ্ক মৌসমে ধুলোর মধ্য দিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে। আমি শুধু না এই রাস্তা দিয়ে বিরামপুর, গণধখলা, চকরামপুর, কোনাবাড়ি ঠাডু পাড়ার কয়েক শ মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে। পরিবহনে করে ধান, সবজিসহ নানা পণ্য এক স্থান অন্য স্থানে আনা-নেয়া করা হয়। কিন্তু রাস্তা খুঁড়ে কাজ বন্ধ করে রাখায় মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে।মেসার্স ইসতিয়াক আহমেদ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার সর্দার গোলাম ফারুক বলেন, জায়গা-জমি নিয়ে দুইপক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে। তাদের পারিবারিক ঝামেলা রাস্তার ওপর দিয়ে গড়াচ্ছে। কারণ রাস্তার আইডি যেভাবে রয়েছে সেভাবেই আমি কাজ শুরু করেছি। এরমধ্যে তারা বলছে পুকুরে মাটি কেটে ভরাট করে সেখান দিয়ে রাস্তা নিতে, তা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। তাই কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে তারাই ভোগবে, আমার কি। তবে কাজ করার জন্য আমি কাউকে হুমকি দেইনি। ত্রিশাল উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ শফিউল্লাহ খন্দকার বলেন, আইডি অনুযায়ী রাস্তার কাজের ইস্টিমেট করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু কাজ যখন প্রায় অর্ধেকের বেশি হয়েছে তখন আলাল উদ্দিন বলছেন তিনি তার জায়গা দিয়ে রাস্তা দিবেন না। এটা হতে পারে না। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারী বলেন, স্থানীয় বাসিন্দা আলাল উদ্দিন একটি অভিযোগ দিয়েছেন। উপজেলা প্রকৌশলী সরেজমিন গিয়ে পরিদর্শনও করেছেন। দেখছি তাদের সাথে কথা বলে সমাধানের মাধ্যমে রাস্তার কাজ শুরু করা যায় কি না। রাস্তার কাজ না হলে ক্ষতি এলাকাবাসীরই হবে।