ময়মনসিংহ ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালুকায় পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ; দখল পাল্টা দখল

দৈনিক মুক্তকণ্ঠ
  • আপলোড সময়: ১১:২১:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪
  • / ১৯০ বার পড়া হয়েছে

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:- গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা কামালের দখলে থাকা প্রায় ২০ বিঘা পৈত্রিক সম্পত্তি উদ্ধারের দাবী করেন রফিক, জসিম উদ্দিন ও তার পরিবার। অপরদিকে ওই জমির ক্রয়সূত্রে মালিকানা দাবী করে ন্যায় বিচার কামনা করেন ওই জেলা পরিষদের সদস্য। ঘটনাটি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের জামিরদিয়া এলাকার।

সুত্রে জানা যায়, জামিরদিয়া মৌজা সিএস খতিয়ান নং- ১১৮, আর ও আর খতিয়ান নং-২৩০ এর ২০৭,১০৬,২০৮, ২০৯ এবং ২১০ নং দাগে সর্বমোট ১১.৭৭ একর জমি থেকে ৫ আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানে আ’লীগ সরকারের পতনের পর রফিক ও জসিম উদ্দিন গং তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি দাবী করে ২০ বিঘা জমি দখলে নেয়। পরে এ ঘটনায় ওই জমির ক্রয়সূত্রে মালিকানা দাবী করে প্রশাসনের কাছে আইনী সহায়তা চেয়েছেন সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা কামাল।

মোঃ রফিক মিয়া বলেন, উক্ত জমি হিসাবদি শেখের চার ছেলে ছিল ইসমাইল শেখ, ইন্তাজ আলী শেখ, জুবেদালী শেখ, ও সুবেদালী শেখ সবার সম্পত্তিই নিলাম হয় ৩০/০৮/১৯৩২ সনে। ইসমাইল শেখের এক কন্যা মানিক জান। মানিক জানের চার ছেলে তিন কন্যা ছিলো পরে মফিজ উদ্দিন গংদের সাথে মামলা করে মানিক জানের স্বামী মুনসুর শেখ, হিসাবদি শেখের সম্পত্তি নিলাম হওয়ার কারেন মফিজ উদ্দিন গংদের সাথে মামলায় হেরে যায় অতএব ইসমাইল শেখ গং উক্ত সম্পত্তি হইতে না-শরীক হয়ে যায় পরে হিসাবদি শেখের ২য় পুত্র জুবেদ আলী ও তার পুত্র আফাজ উদ্দিন (রফিকের নানা) ২৪/৬/১৯৩৫ সনে জমিদারের কাছ থেকে সম্পাদিত ও রেজিষ্ট্রিকৃত ৭৪৭ নং বর্গা কবুলিয়ত গ্রহন করে। পরে বর্গা কবুলিয়ত ও পাট্টামুলে খাজনা পরিশোধ করে ৫.৭৪ একর ও পিতা, মাতা ও অন্যত্র থেকে ক্রয় করে মোট ৭.৯১ একর ভূমি মালিক হয় পরে আফাজ উদ্দিন ০.৭৪ একর ভূমি অন্যত্র বিক্রি করে বাকি ৭.১৭ ভূমি ওয়ারিশদের জন্য রেখে মৃত্যু বরণ করে। ওই দাগের মধ্যে ১.৬২ একর ভূমি মালিক মোস্তফা কামাল এর পিতা। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে আফাজ উদ্দিন গংদের পুরো জমিই সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা কামাল গং বেআইনি ভাবে জবরদখল করে রাখে। সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা কামাল গং মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন দফতরে মুখিক ভাবে অবগত করছেন তারা এসিল্যান্ড অফিস থেকে তাদের পক্ষে রায় পেয়েছেন এবং আমরা উনাদের কোর্টের মাধ্যমে একটি না দাবী আপোষ নামা দিয়েছি, উনাদের এই বক্তব্যটি আদৌও সত্য নয়।

সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তফা কামাল জানান, হিসাবদি শেখের মৃত্যুর পর আমার দাদারা তিন ভাইয়ের এক জনের জমি ঋণের দায়ে জমিদার নিলাম করেন। বাকি সম্পত্তি পরবর্তীতে বৈধভাবে আর ও আরে লিপিবদ্ধ হয়। ২০৭নং দাগের জমি আমার চাচাগণ ১৯৮০/৮২ সনে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। আমি তাদের কাছ থেকে ২০০৪ সালে ক্রয় করে শান্তিপূর্ণ ভোগ দখলে ছিলাম। যারা পূর্বে বিক্রি করেছে তারাই পুনঃ জবর দখল করে। মডেল থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেও কোন বিচার পাইনি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আলীনূর খান জানান, উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের জামিরদিয়ায় সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা কামাল গং ও রফিক গংদের পৃথক বিষয়টি নিয়ে সকল কাগজপত্র দেখে শুনানি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

অভিযোগের বিষয়ে ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ কামাল আকন্দ জানান, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ, সেনা বাহিনী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন দুই পক্ষই। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে আমরা সেভাবেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিবো।

ট্যাগস :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

ভালুকায় পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ; দখল পাল্টা দখল

আপলোড সময়: ১১:২১:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:- গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা কামালের দখলে থাকা প্রায় ২০ বিঘা পৈত্রিক সম্পত্তি উদ্ধারের দাবী করেন রফিক, জসিম উদ্দিন ও তার পরিবার। অপরদিকে ওই জমির ক্রয়সূত্রে মালিকানা দাবী করে ন্যায় বিচার কামনা করেন ওই জেলা পরিষদের সদস্য। ঘটনাটি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের জামিরদিয়া এলাকার।

সুত্রে জানা যায়, জামিরদিয়া মৌজা সিএস খতিয়ান নং- ১১৮, আর ও আর খতিয়ান নং-২৩০ এর ২০৭,১০৬,২০৮, ২০৯ এবং ২১০ নং দাগে সর্বমোট ১১.৭৭ একর জমি থেকে ৫ আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানে আ’লীগ সরকারের পতনের পর রফিক ও জসিম উদ্দিন গং তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি দাবী করে ২০ বিঘা জমি দখলে নেয়। পরে এ ঘটনায় ওই জমির ক্রয়সূত্রে মালিকানা দাবী করে প্রশাসনের কাছে আইনী সহায়তা চেয়েছেন সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা কামাল।

মোঃ রফিক মিয়া বলেন, উক্ত জমি হিসাবদি শেখের চার ছেলে ছিল ইসমাইল শেখ, ইন্তাজ আলী শেখ, জুবেদালী শেখ, ও সুবেদালী শেখ সবার সম্পত্তিই নিলাম হয় ৩০/০৮/১৯৩২ সনে। ইসমাইল শেখের এক কন্যা মানিক জান। মানিক জানের চার ছেলে তিন কন্যা ছিলো পরে মফিজ উদ্দিন গংদের সাথে মামলা করে মানিক জানের স্বামী মুনসুর শেখ, হিসাবদি শেখের সম্পত্তি নিলাম হওয়ার কারেন মফিজ উদ্দিন গংদের সাথে মামলায় হেরে যায় অতএব ইসমাইল শেখ গং উক্ত সম্পত্তি হইতে না-শরীক হয়ে যায় পরে হিসাবদি শেখের ২য় পুত্র জুবেদ আলী ও তার পুত্র আফাজ উদ্দিন (রফিকের নানা) ২৪/৬/১৯৩৫ সনে জমিদারের কাছ থেকে সম্পাদিত ও রেজিষ্ট্রিকৃত ৭৪৭ নং বর্গা কবুলিয়ত গ্রহন করে। পরে বর্গা কবুলিয়ত ও পাট্টামুলে খাজনা পরিশোধ করে ৫.৭৪ একর ও পিতা, মাতা ও অন্যত্র থেকে ক্রয় করে মোট ৭.৯১ একর ভূমি মালিক হয় পরে আফাজ উদ্দিন ০.৭৪ একর ভূমি অন্যত্র বিক্রি করে বাকি ৭.১৭ ভূমি ওয়ারিশদের জন্য রেখে মৃত্যু বরণ করে। ওই দাগের মধ্যে ১.৬২ একর ভূমি মালিক মোস্তফা কামাল এর পিতা। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে আফাজ উদ্দিন গংদের পুরো জমিই সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা কামাল গং বেআইনি ভাবে জবরদখল করে রাখে। সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা কামাল গং মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন দফতরে মুখিক ভাবে অবগত করছেন তারা এসিল্যান্ড অফিস থেকে তাদের পক্ষে রায় পেয়েছেন এবং আমরা উনাদের কোর্টের মাধ্যমে একটি না দাবী আপোষ নামা দিয়েছি, উনাদের এই বক্তব্যটি আদৌও সত্য নয়।

সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তফা কামাল জানান, হিসাবদি শেখের মৃত্যুর পর আমার দাদারা তিন ভাইয়ের এক জনের জমি ঋণের দায়ে জমিদার নিলাম করেন। বাকি সম্পত্তি পরবর্তীতে বৈধভাবে আর ও আরে লিপিবদ্ধ হয়। ২০৭নং দাগের জমি আমার চাচাগণ ১৯৮০/৮২ সনে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। আমি তাদের কাছ থেকে ২০০৪ সালে ক্রয় করে শান্তিপূর্ণ ভোগ দখলে ছিলাম। যারা পূর্বে বিক্রি করেছে তারাই পুনঃ জবর দখল করে। মডেল থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেও কোন বিচার পাইনি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আলীনূর খান জানান, উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের জামিরদিয়ায় সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা কামাল গং ও রফিক গংদের পৃথক বিষয়টি নিয়ে সকল কাগজপত্র দেখে শুনানি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

অভিযোগের বিষয়ে ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ কামাল আকন্দ জানান, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ, সেনা বাহিনী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন দুই পক্ষই। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে আমরা সেভাবেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিবো।