উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণে ব্রহ্মপুত্র-যমুনায় পানি বৃদ্ধি
- আপলোড সময়: ০৩:৫৮:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪
- / ১২৯ বার পড়া হয়েছে
ওমর ফারুক রনি, গাইবান্ধা প্রতিনিধি:- গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজানের নেমে আসা পানিতে গাইবান্ধার ফুলছড়ির ব্রহ্মপুত্র-যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেই সাথে শুরু হয়েছে ব্যাপক নদীভাঙন। ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে ২৫টি পরিবারের বসতভিটা, আবাদি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর অনেকেই দিশেহারা হয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।
ফুলছড়ি উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে এরেন্ডাবাড়ী, ফজলুপুর, ফুলছড়ি, উড়িয়া, কঞ্চিপাড়া, গজারিয়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বন্যার পানির সাথে সাথে এসব এলাকায় বসবাসকারী লোকজনের শুরু হয়েছে এক নতুন লড়াই। পানির তীব্র স্রোতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়ায় ২৫টি পরিবার তাদের আবাদি জমি ও ঘর-বাড়ি হারিয়েছেন। অব্যাহত ভাঙ্গনে উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের জুয়েল রানা, শফিকুল ইসলাম, ফজলুপুর ইউনিয়নের আব্দুর রশিদ মিয়া, আব্দুর রহিম মাস্টার, ময়নাল, এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের মমিনুল ইসলাম, শাহিন আলম, সোহাগ আকন্দসহ প্রায় ২৫টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
ফজলুপুর ইউনিয়নের আব্দুর রশিদ মিয়া জানান, নদী ভাঙতে ভাঙতে তার বসতবাড়ির আঙ্গিনায় এসেছে। শুক্রবার বিকেলে থাকার ঘরটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আসবাবপত্র কিছুটা সরাতে পারলেও সবই চলে গেছে নদীর পেটে। ভাঙনের শিকার উড়িয়া ইউনিয়নের জুয়েল রানা বলেন, বন্যা শুরুর আগেও এ গ্রামে শতাধিক পরিবারের বসবাস ছিল। নদীভাঙ্গনের শিকার হয়ে আমার মতো একের পর এক পরিবার বাড়ি-ঘর নিয়ে অন্যত্র পাড়ি জমিয়েছেন।
গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় জেলার ব্রহ্মপুত্রের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতির উপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জগবন্ধু মন্ডল জানান, নদী বেষ্টিত যেসব ইউনিয়ন রয়েছে, সেই সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ ইউপি সদস্যদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। নদীর পাড় সংলগ্ন যেসব ওয়ার্ড রয়েছে সেখানে গ্রুপ ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ওইসব এলাকায় শুকনা খাবার বিতরণের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রাথমিক সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করেছি, সেখানেও দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্ততির বিষয়ে সার্বিক আলোচনা হয়েছে। শুকনো খাবারের প্যাকেট মজুত রয়েছে ৫০টি। জরুরী ত্রাণ হিসেবে আরও প্যাকেটের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।