ময়মনসিংহ ১২:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালুকায় পানিতে তলিয়ে গেছে শতাধিক মৎস খামার দিশেহারা খামারিরা

দৈনিক মুক্তকণ্ঠ
  • আপলোড সময়: ১১:৩৬:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ অক্টোবর ২০২৩
  • / ১৮৫ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি: গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণের পর উজানের পানি নেমে আসায় ময়মনসিংহের ভালুকায় ভেসে গেছে প্রায় তিন শতাধিক মৎস খামার। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মৎস কর্মকর্তা। এতে করে একেবারেই পথে বসে গেছেন প্রায় শতাধিক মৎস খামারি। জানাযায় উপজেলার বিরুনিয়া ইউনিয়নের বাইরপাথার গ্রামের  খামারি তোজাম্মেল হক সুমন ও আব্দুস সামাদ জানান । এক রাতে তারা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। মনাপাথার বিলে ৬২ জন কৃষকের কাছ থেকে ৫০ একর জমি সাড়ে ২২ লাখ টাকা বাৎসরিক ভাড়া হিসাবে ১৪ বছর মেয়াদে লীজ নেন তারা। ৫/৬ বছর যাবৎ মাছ চাষ করে যাবতীয় খরচ বাদে মোটামোটি লাভের মুখ দেখছিলেন। এ বছর তাদের খামারে প্রতিটি পাঙ্গাসের ওজন প্রায় আড়াই কেজি। শুক্রবার রাতে খামারের বাধ ভেঙে পাঙ্গাস, রুই, কাতল, মৃগেলসহ বিভিন্ন প্রজাতের প্রায় ১০ কোটি টাকার মাছ বানের পানিতে ভেসে গেছে।খামারি তোজাম্মেল হক সুমন আরও জানায়, খামারের বাধ ভেঙে বানের পানিতে সব মাছ ভেসে যাওয়ায় তারা এখন সর্বশান্ত। বিশ্বাস ফিস ফিড কোম্পানীর কাছ থেকে তাদের খামারে ৪ কোটি টাকার মাছের খাদ্য বাকিতে নিখে খামারের মাছগুলো বড় করেছিলেন। মাছ বিক্রি করে জমির ভাড়া ও খাদ্যের টাকা পরিশোধ করার কথা ছিলো। হটাৎ করেই সব শেষ হয়ে গেলো। বাকিতে মাছের খাদ্যের টাকা ও লীজ নেওয়া জমির ভাড়া পরিশোধের চিন্তায় তিনি এখন দিশেহারা।উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের মৎস খামারি আতিকুল ইসলাম আতিক জানান, তার লবণকোঠা এলাকায় অবস্থিত ১০একর জমির খামার থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। হঠাৎ করে বৃষ্টির পানিতে তার ফিসারি তলিয়ে যাবে ভাবতেও পারেননি ব্যবস্থা নেয়ার আগেই সব শেষ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিরুনিয়া, মেদিলা, আশকা, রাজৈ, হবিরবাড়ী, গোয়ারী, পানিভান্ডা, পাঁচগাঁও, সাতেঙ্গা, রাংচাপড়া, কাঁঠালী এলাকার শত শত মৎস্য খামারের মাছ ভেসে গেছে। ভালুকা পৌর এলাকার নূরুল ইসলামের ২০ একর জমির খামার হতে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। কংশেরকুল গ্রামের আলামীন, মুক্তার আলী, আইয়ূব আলী, রমজান আলী সহ অনেকের মৎস্য খামার তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে বলে জানিয়েছেন খামারিরা। ক্ষতিগ্রস্থ খামারিকে বিশেষ প্রনোদনা দেওয়ার দাবি জানান তারা। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সাইদুর রহমান বলেন, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আটশত হেক্টর জমির তিন শতাধিক মৎস্য খামার হতে প্রায় দুই হাজার মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে। এতে শতাধিক খামার মালিকের প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি শুক্রবার সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য খামারগুলো পরিদর্শণ করছেন।

ট্যাগস :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

ভালুকায় পানিতে তলিয়ে গেছে শতাধিক মৎস খামার দিশেহারা খামারিরা

আপলোড সময়: ১১:৩৬:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৯ অক্টোবর ২০২৩

বিশেষ প্রতিনিধি: গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণের পর উজানের পানি নেমে আসায় ময়মনসিংহের ভালুকায় ভেসে গেছে প্রায় তিন শতাধিক মৎস খামার। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মৎস কর্মকর্তা। এতে করে একেবারেই পথে বসে গেছেন প্রায় শতাধিক মৎস খামারি। জানাযায় উপজেলার বিরুনিয়া ইউনিয়নের বাইরপাথার গ্রামের  খামারি তোজাম্মেল হক সুমন ও আব্দুস সামাদ জানান । এক রাতে তারা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। মনাপাথার বিলে ৬২ জন কৃষকের কাছ থেকে ৫০ একর জমি সাড়ে ২২ লাখ টাকা বাৎসরিক ভাড়া হিসাবে ১৪ বছর মেয়াদে লীজ নেন তারা। ৫/৬ বছর যাবৎ মাছ চাষ করে যাবতীয় খরচ বাদে মোটামোটি লাভের মুখ দেখছিলেন। এ বছর তাদের খামারে প্রতিটি পাঙ্গাসের ওজন প্রায় আড়াই কেজি। শুক্রবার রাতে খামারের বাধ ভেঙে পাঙ্গাস, রুই, কাতল, মৃগেলসহ বিভিন্ন প্রজাতের প্রায় ১০ কোটি টাকার মাছ বানের পানিতে ভেসে গেছে।খামারি তোজাম্মেল হক সুমন আরও জানায়, খামারের বাধ ভেঙে বানের পানিতে সব মাছ ভেসে যাওয়ায় তারা এখন সর্বশান্ত। বিশ্বাস ফিস ফিড কোম্পানীর কাছ থেকে তাদের খামারে ৪ কোটি টাকার মাছের খাদ্য বাকিতে নিখে খামারের মাছগুলো বড় করেছিলেন। মাছ বিক্রি করে জমির ভাড়া ও খাদ্যের টাকা পরিশোধ করার কথা ছিলো। হটাৎ করেই সব শেষ হয়ে গেলো। বাকিতে মাছের খাদ্যের টাকা ও লীজ নেওয়া জমির ভাড়া পরিশোধের চিন্তায় তিনি এখন দিশেহারা।উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের মৎস খামারি আতিকুল ইসলাম আতিক জানান, তার লবণকোঠা এলাকায় অবস্থিত ১০একর জমির খামার থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। হঠাৎ করে বৃষ্টির পানিতে তার ফিসারি তলিয়ে যাবে ভাবতেও পারেননি ব্যবস্থা নেয়ার আগেই সব শেষ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিরুনিয়া, মেদিলা, আশকা, রাজৈ, হবিরবাড়ী, গোয়ারী, পানিভান্ডা, পাঁচগাঁও, সাতেঙ্গা, রাংচাপড়া, কাঁঠালী এলাকার শত শত মৎস্য খামারের মাছ ভেসে গেছে। ভালুকা পৌর এলাকার নূরুল ইসলামের ২০ একর জমির খামার হতে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। কংশেরকুল গ্রামের আলামীন, মুক্তার আলী, আইয়ূব আলী, রমজান আলী সহ অনেকের মৎস্য খামার তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে বলে জানিয়েছেন খামারিরা। ক্ষতিগ্রস্থ খামারিকে বিশেষ প্রনোদনা দেওয়ার দাবি জানান তারা। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সাইদুর রহমান বলেন, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আটশত হেক্টর জমির তিন শতাধিক মৎস্য খামার হতে প্রায় দুই হাজার মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে। এতে শতাধিক খামার মালিকের প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি শুক্রবার সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য খামারগুলো পরিদর্শণ করছেন।