ভালুকায় ভারি বর্ষায় পানি বন্ধি হাজার মানুষ
- আপলোড সময়: ১২:৫৩:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩
- / ২৪১ বার পড়া হয়েছে
খলিলুর রহমান:-ময়মনসিংহের ভালুকায় টানা দুই দিনের ভারী বর্ষনে পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার। অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায়, মানুষের সৃষ্ট এই জলাবদ্ধতায় জনদুর্ভোগের সুষ্টি হয়েছে। সরেজমিনে পৌর সদর, হবিরবাড়ী এলাকার আমতলী, মাষ্টার বাড়ী ও সিডষ্টোর বাজার সহ উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে জানাযায়. অপরিকল্পিতভাবে নীচু জমিগুলো ভরাট করে বাড়ি-ঘর এবং শিল্প কারখানা নির্মাণ করার ফলে পানি চলাচলের স্বাভাবিক পথ বন্ধ হওয়ায় এই জলাবদ্ধাতা সৃষ্টি হয়েছে। এই বর্ষায় বহু বাড়ী-ঘর তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি সড়ক ও শতাধিক মাছের খামার তলিয়েগেছে। স্থানীয়রা জানান, ৮৮ এর বন্যায়ও হবিরবাড়ী এলাকায় পানি উঠেনি। কিন্তু এখন অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়নের ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি বন্ধি হয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মাহমুদা সুলতানা মুন্নি জানান, ভারী বর্ষনের ফলে জলাবব্ধতা সৃষ্টি হয়ে এলাকায় চরম জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। বেশ কয়েকটি মাটির ঘর ধসে পড়েছে। আরো মাটির ঘর ধসে পড়তে পারে। সংবাদ পেয়ে (৬অক্টোবর) শুক্রবার সকালে উপজেলার সিডষ্টোর বাজার সহ পানিবন্ধি কয়েকটি এলাকা পরদির্শন করেন স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনু ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদুল আহমেদ। এসময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তা ও পশুপালন কর্মকর্তা সঙ্গে ছিলেন। স্থানীয়রা জানান, পানি গমনের পথগুলো, যেমন ডোবা, নালা ও খাল দখল ও ভরাট করে বাড়ি-ঘর ও শিল্প প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করার ফলে পানি চালাচলের স্বাভাবিক পথ রুদ্ধ হয়ে পড়ায় এই দৃর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবী সিডষ্টোর বাজার থেকে লাউতি খাল পর্যন্ত ড্রেন সংযুক্ত করে ওই এলাকার পানি নিষ্কাশনের স্থায়ী সমাধান করা। অপরিকল্পিত ভাবে বাড়ি-ঘর নির্মাণের ফলে একই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে পৌর সদরের কয়েকটি এলাকায়ও। বিশেষ করে পৌর সদরের দুই নং ওয়ার্ড এর খান বাড়ী এলাকায় মানুষ সামান্য বৃষ্টিতেই পানিবন্ধি হয়ে পড়ে। পৌরসভার দুই নং ওয়ার্ড বাসিন্ধা চাপর বাড়ী দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোবাশ্যারুল ইসলাম সবুজ জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই তাদের ওই এলাকাটি পানিতে তলিয়ে যায় এ নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ও পৌর মেয়র এর সাথে তারা বারবার যোগাযোগ করেও দৃর্ভোগ লাগবের কোন প্রতিকার করতে পারেনি। তিনি বলেন, পানি চলাচলের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা না হলে আমাদের এই দুর্ভোগ কোনদিনই লাগব হবেনা। মানুষের বাড়ী-ঘর তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি শতাধিক মাছের খামার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। এতেকরে স্থানীয় মাছ চাষীরা কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, বিল্ডিং নীতিমালা না মানার কারণে পানি চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে এই দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, বাড়ী-ঘর নির্মাণের ক্ষেত্রে আমাদের আরো সচেতন ও সরকারী নীতিমালা মানা উচিৎ। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদুল আহমেদ জানান, সিডষ্টো বাজার ও ঝালপাজাসহ বেশ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে অপরিকল্পিত বাড়ী-ঘর নির্মাণের ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন উপায়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে পানি নিষ্কাশনের জন্য হবিরবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, এছাড়াও ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ফোনে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে যাতে করে এই দুর্যোগ কালিন সময়ে কোন রকম আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটে। জনস্বার্থে যা যা করা প্রয়োজন তাই করা হচ্ছে। সরেজমিনে এলাকা পরদির্শন শেষে সাংসদ আলহাজ্ব কাজিম উদ্দিন আহমেদ জানান, পানি চলাচলের পথ যেখানে যেখানে বন্ধ রয়েছে সেগুলো দ্রুত সময়ে খোলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যেই পানি নিষ্কাশনের জন্য স্থায়ী ড্রেন স্থাপনের পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। উল্লেখ্য, ১৯৭১ এর ২ অক্টোবর ৩৮১ মিলি মিঃ বৃষ্টি পাত হয়েছিলো। এবার ৫২ বছর পর ৩৭৮ মিলি মিঃ বৃষ্টিপাত দেখলো ভালুকার মানুষ।