খলিলুর রহমান:- ময়মনসিংহের ভালুকায় এবার সড়ক যানজট মুক্ত থাকায় ঈদে ঘরমোখো এবং ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের ঈদ যাত্রা ছিলো নির্বিঘ্ন ও স্বস্থ্যির। ব্যতিক্রম হলেও দৃশ্যত যানজট মুক্ত ছিলো সড়ক, সন্তুষ্ট ঘরমুখো মানুষ। যানজট মুক্ত সড়ক, ঈদে ঘরমোখো মানুষের নির্বিঘ্নে ও স্বস্থ্যির ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করায় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়েছেন সাধারণ যাত্রী ও কর্মজীবী মানুষ। ভালুকা একটি উঠতি শিল্প এলাকা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লক্ষাধিক শ্রমজীবী মানুষ এখানকার বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় কর্মরত। ঈদে সব শিল্প-কারখানা একযোগে ছুটি হওয়ার ফলে নারীর টানে গ্রামের দিকে ছুটেন শ্রমজীবী মানুষ। এর ফলে একদিকে যানবাহনের সংকট অপরদিকে সড়কে দীর্ঘ যানজটের কারণে ঈদের দুই দিন পূর্বে রওনা দিয়েও সময় মত বাড়ী ফিরতে পারতোনা অনেকেই। অনেককেই রাস্তায় ঈদের নামাজ আদায় ও ঈদের দিন বিকেলেও কেউ কেউ বাড়ী পৌছাতে হতো। এছাড়াও একদিকে যানজট অপরদিকে মাত্রাতিরিক্ত ভাড়ার ফলে ঘরমুখো মানুষ একটা হয়রানীর মধ্যে পড়তো। এমন অভিজ্ঞতা বিগত দিনের। ভালুকার মাস্টারবাড়ী থেকে শুরু হয়ে সিডষ্টোর, ভালুকা সদর, ভরাডোবা, ত্রিশাল হয়ে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ঈদের আগের দিন সকাল থেকে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত সড়কে যানজটের লেগেই থাকতো। কিন্তু এবারের ঈদে সড়কে কোন যানজটই ছিলোনা বললেই চলে। এবারের দৃশ্য ছিলো ব্যতিক্রম। সড়কে যাত্রা ও ভাড়াও ছিলো স্বাভাবিক। এবার পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে যানজট নিরসন ও নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচলের জন্য আগে থেকেই যৌথভাবে মাঠে নামে ভালুকা উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, ভালুকা মডেল থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠন গুলি। সড়ক যানজট মুক্ত রাখতে তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচষ্টায় আসে সফলতাও। সাধারণ মানুষ উপভোগ করলো একটি স্বস্থ্যির ঈদ যাত্রা। এবার ঈদ পূর্ববর্তি সময়ে ভালুকার স্কয়ার মাস্টার বাড়ি থেকে ভরাডোবা পর্যন্ত মহাসড়কের পাশে অবৈধ স্থাপনা দোকান পাট উচ্ছেদ অভিযান যৌথ ভাবে পরিচালনা করে স্থানীয় প্রশাসন। প্রশাসনের আহবানে সাড়াদিয়ে পাশে এসে দাঁড়ায় স্থানীয় শ্রমিক ও মালিক সংগঠন গুলো, ফলে একদিকে সড়ক যানজট মুক্ত রাখা অপরদিকে যাত্রী ভাড়াও ছিলো সহনীয় পর্যায়ে। ২৫ জুন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকার অংশ পরিদর্শণ কালে জেলা পুলিশ সুপার মাসুম আহম্মেদ ভূইঞা বলেন, যানজট নিরসনের জন্য সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ইতোমধ্যে বেশ কিছু স্থানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে সড়কে কোন প্রকার চাদাবাজি করা যাবেনা। চাদাবাজি বা প্রতিবন্ধকতা শৃষ্টি কারীর বিরুদ্ধে কঠোর হুসিয়ারীও দেন তিনি। এর আগে টানা তিন দিন ভালুকা অঞ্চলে সড়ক যানজট মুক্ত করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদুল আহমেদ’র নেতৃত্বে যৌথ ভাবে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদুল আহমেদ ঘোষনা করেন, যে কোন মূল্যে সড়ক যানজট মুক্ত রাখা হবে। এ সময় সড়ক যানজট মুক্ত রাখতে প্রশাসনের সকল পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সর্বাত্তক সহযোগীতার আশ্বাস দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ। এছাড়াও শিল্পপুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় শিল্প-কারখানার মালিকদের সাথে আলোচনা করে এক সাথে নয়, পর্যায় ক্রমে কারখানা গুলোর ছুটির ব্যবস্থা করেন। ফলে ঘরে ফেরা মানুষের জন্য ঈদ যাত্রা স্বস্থ্যিদায়ক হয়েছে। ভালুকা উপজেলা মালিক সমিতির সভাপতি জসিম উদ্দিন আহমেদ জানান, সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনু, জেলা পুলিশ সুপার মাসুম আহম্মেদ ভূইঞা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদুল আহমেদ এর নির্দেশনা ছিলো যে কোন মূল্যে ঈদে মহাসড়ক যানজট মুক্ত রাখতে হবে। আমরা উনাদের আশ্বাস দিয়ে ছিলাম, যে কোন মূল্যে সড়ক যানজট মুক্ত রাখতে আমরা সহযোগীতা করবো। আমরা আমাদের কথা রেখেছি। জেলা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, ভালুকা মডেল থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও শ্রমিক সংগঠনকে ধন্যবাদ জানিয়ে জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, সকলের সহযোগীতায়, সকলে মিলে আমরা এবারের ঈদে সড়ক যানজট মুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছি।