ময়মনসিংহ ০১:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালুকায় নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়ক ধসে যানবাহন চলাচল বন্ধ

দৈনিক মুক্তকণ্ঠ
  • আপলোড সময়: ১২:০৪:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুলাই ২০২৩
  • / ১৫৮ বার পড়া হয়েছে

ষ্টাফ রিপোর্টার:- ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নে সিডস্টোর-সখীপুর সড়কের লাউতি খালে নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় এক সপ্তাহ সময় ধরে। খবর পেয়ে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল আহাম্মেদ সরেজমিন পরিদর্শন করে সেতুটির দুই পাড়ে কাঠ দিয়ে পাটাতন নির্মাণ করে পথচারীদের চলাচলের ব্যবস্থা করেন। ঈদে আগে লাউতি খালটি খননের সময় বিকল্প সড়কটির পাশ থেকে মাটি কেটে নেয়ায় এমনটা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। একাধিক সূত্রে জানা যায়, সময়ের ব্যবধানে উপজেলার সিডস্টোর-সখীপুর সড়কের গুরুত্বপূর্ণ লাউতি সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিষয়টি নজরে আসলে এলজিইডি সেতুটি পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেয় এবং ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর থেকে ওই স্থানে ৩ কোটি ২৩ লাখ ১৫ হাজার ৬৮৪ টাকা ব্যয়ে ৩১ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ দশমিক ৭ মিটার প্রস্থের একটি সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করে। ওই সময় পাশাপাশি লাউতি খাল পারাপারের জন্য বিকল্প রাস্তা পুরাতন সেতুর দুইপাশ থেকে মাটি কেটে তৈরি করা হয়। কিন্তু বিকল্প রাস্তাটি বর্ষার পানি প্রবাহ ও যানবাহনের চাপে কিছু দিনের মধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং এক পর্যায়ে তা ভেঙে পানিতে ভেসে যায়। রাস্তাটি সচল রাখতে বাঁশের সাঁকো তৈরি ও পরে যানবাহন চলাচল অব্যাহত রাখার জন্য স্থানীয় এমপি কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনুর উদ্যোগে রিং পাইপ বসিয়ে স্থানীয়ভাবে ওই স্থানে একটি বিকল্প সড়ক তৈরি করা হয়। এতোদিন ওই বিকল্প সড়ক দিয়েই চলাচল করছিল অটোরিকশা ও ইজিবাইকসহ বিভিন্ন ধরনের হালকা ও ভারী যানবাহন। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড লাউতি খাল খননের সময় বিকল্প ওই সড়কের গোড়া থেকে অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটার সময় রিং পাইপ সরে যাওয়ার অভিযোগ উঠে। এতে ভাঙতে শুরু করে বিকল্প সড়কটি এবং এক পর্যায়ে ঈদের সময় যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানান, এই সড়কে প্রতিদিন বিভিন্ন কারখানার গাড়ি ও শত শত হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করে। তা ছাড়া স্থানীয়সহ বিভিন্ন কারখানার হাজার হাজার শ্রমিক, উপজেলা কাচিনা ও হবিরবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামসহ সখীপুর উপজেলার মানুষ ও যানবাহন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। স্থানীয়রা জানান, এতোদিন যানবাহনে করে বিকল্প সড়ক হয়ে লাউতি খাল পার হতে পারলেও ঈদুল আজহা থেকে বিকল্প সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় এখন ওই সড়কে কোনো যানবাহন চলতে পারছে না। কাঁঠালসহ কাচামাল পরিবহনে বিঘ্ন ঘটছে। যানচলাচল বন্ধ থাকায় কৃষিপণ্য ও কারখানার মালামাল পরিবহন করা যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীসহ জনগণের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত বিকল্প রাস্তাটি চলাচল উপযোগী করার দাবি জানান ওই পথে চলাচলকারীরা। উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান জানান, লাউতি সেতু নির্মাণের শুরুতে ওই স্থানে তৈরী রাস্তাটি এক পর্যায়ে ভেঙে গেলে স্থানীয় এমপি কাজিম উদ্দিন আহাম্মেদের উদ্যোগে স্থানীয়ভাবে রিং পাইপ বসিয়ে একটি বিকল্প সড়ক তৈরি করা হয়। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড লাউতি খাল খননের সময় বিকল্প ওই সড়কের গোড়ার মাটি কেটে নেয়ায় সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নতুন সেতুর কাজও প্রায় সমাপ্তির পথে। আপাতত লাউতি খাল পার হয়ে মানুষ যাতে নতুন সেতুতে উঠতে পারে সে জন্য বিকল্প হিসেবে সেতুর দুই পাশে কাঠের পাটাতন বানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাজাহান জানান, লাউতি খাল খননের জন্য নির্মিত বিকল্প ওই সড়কের গোড়ার মাটি কাটা হয়নি। নিরাপদ দূরত্ব রেখেই কাটা হয়েছে। উজানের পানির চাপ, অতিবৃষ্টির কারণে মাটি সড়ে গিয়ে সড়কটি ধসে যাচ্ছে। ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল আহাম্মেদ জানান, ঘটনার সংবাদ পাওয়া মাত্রই তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে পথচারীদের চলাচলের জন্য নির্মাণাধীন সেতুটির দুই পাশে কাঠের পাটাতন নির্মাণের ব্যবস্থা করেন

ট্যাগস :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

ভালুকায় নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়ক ধসে যানবাহন চলাচল বন্ধ

আপলোড সময়: ১২:০৪:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ জুলাই ২০২৩

ষ্টাফ রিপোর্টার:- ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নে সিডস্টোর-সখীপুর সড়কের লাউতি খালে নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় এক সপ্তাহ সময় ধরে। খবর পেয়ে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল আহাম্মেদ সরেজমিন পরিদর্শন করে সেতুটির দুই পাড়ে কাঠ দিয়ে পাটাতন নির্মাণ করে পথচারীদের চলাচলের ব্যবস্থা করেন। ঈদে আগে লাউতি খালটি খননের সময় বিকল্প সড়কটির পাশ থেকে মাটি কেটে নেয়ায় এমনটা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। একাধিক সূত্রে জানা যায়, সময়ের ব্যবধানে উপজেলার সিডস্টোর-সখীপুর সড়কের গুরুত্বপূর্ণ লাউতি সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিষয়টি নজরে আসলে এলজিইডি সেতুটি পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেয় এবং ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর থেকে ওই স্থানে ৩ কোটি ২৩ লাখ ১৫ হাজার ৬৮৪ টাকা ব্যয়ে ৩১ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ দশমিক ৭ মিটার প্রস্থের একটি সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করে। ওই সময় পাশাপাশি লাউতি খাল পারাপারের জন্য বিকল্প রাস্তা পুরাতন সেতুর দুইপাশ থেকে মাটি কেটে তৈরি করা হয়। কিন্তু বিকল্প রাস্তাটি বর্ষার পানি প্রবাহ ও যানবাহনের চাপে কিছু দিনের মধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং এক পর্যায়ে তা ভেঙে পানিতে ভেসে যায়। রাস্তাটি সচল রাখতে বাঁশের সাঁকো তৈরি ও পরে যানবাহন চলাচল অব্যাহত রাখার জন্য স্থানীয় এমপি কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনুর উদ্যোগে রিং পাইপ বসিয়ে স্থানীয়ভাবে ওই স্থানে একটি বিকল্প সড়ক তৈরি করা হয়। এতোদিন ওই বিকল্প সড়ক দিয়েই চলাচল করছিল অটোরিকশা ও ইজিবাইকসহ বিভিন্ন ধরনের হালকা ও ভারী যানবাহন। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড লাউতি খাল খননের সময় বিকল্প ওই সড়কের গোড়া থেকে অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটার সময় রিং পাইপ সরে যাওয়ার অভিযোগ উঠে। এতে ভাঙতে শুরু করে বিকল্প সড়কটি এবং এক পর্যায়ে ঈদের সময় যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানান, এই সড়কে প্রতিদিন বিভিন্ন কারখানার গাড়ি ও শত শত হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করে। তা ছাড়া স্থানীয়সহ বিভিন্ন কারখানার হাজার হাজার শ্রমিক, উপজেলা কাচিনা ও হবিরবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামসহ সখীপুর উপজেলার মানুষ ও যানবাহন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। স্থানীয়রা জানান, এতোদিন যানবাহনে করে বিকল্প সড়ক হয়ে লাউতি খাল পার হতে পারলেও ঈদুল আজহা থেকে বিকল্প সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় এখন ওই সড়কে কোনো যানবাহন চলতে পারছে না। কাঁঠালসহ কাচামাল পরিবহনে বিঘ্ন ঘটছে। যানচলাচল বন্ধ থাকায় কৃষিপণ্য ও কারখানার মালামাল পরিবহন করা যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীসহ জনগণের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত বিকল্প রাস্তাটি চলাচল উপযোগী করার দাবি জানান ওই পথে চলাচলকারীরা। উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান জানান, লাউতি সেতু নির্মাণের শুরুতে ওই স্থানে তৈরী রাস্তাটি এক পর্যায়ে ভেঙে গেলে স্থানীয় এমপি কাজিম উদ্দিন আহাম্মেদের উদ্যোগে স্থানীয়ভাবে রিং পাইপ বসিয়ে একটি বিকল্প সড়ক তৈরি করা হয়। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড লাউতি খাল খননের সময় বিকল্প ওই সড়কের গোড়ার মাটি কেটে নেয়ায় সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নতুন সেতুর কাজও প্রায় সমাপ্তির পথে। আপাতত লাউতি খাল পার হয়ে মানুষ যাতে নতুন সেতুতে উঠতে পারে সে জন্য বিকল্প হিসেবে সেতুর দুই পাশে কাঠের পাটাতন বানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাজাহান জানান, লাউতি খাল খননের জন্য নির্মিত বিকল্প ওই সড়কের গোড়ার মাটি কাটা হয়নি। নিরাপদ দূরত্ব রেখেই কাটা হয়েছে। উজানের পানির চাপ, অতিবৃষ্টির কারণে মাটি সড়ে গিয়ে সড়কটি ধসে যাচ্ছে। ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল আহাম্মেদ জানান, ঘটনার সংবাদ পাওয়া মাত্রই তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে পথচারীদের চলাচলের জন্য নির্মাণাধীন সেতুটির দুই পাশে কাঠের পাটাতন নির্মাণের ব্যবস্থা করেন