ময়মনসিংহ ১১:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ত্রিশাল-ফুলবাড়িয়া সড়কে চরম দুর্ভোগ ঠিকাদারের গাফিলতিতে ৫ বছরেও শেষ হয়নি সড়কের সংস্কারকাজ

দৈনিক মুক্তকণ্ঠ
  • আপলোড সময়: ১১:৩৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০২৩
  • / ২৩৩ বার পড়া হয়েছে

মোহাম্মদ সেলিম,ত্রিশাল ময়মনসিংহঃ- পিচঢালা সড়কজুড়ে ছিল অসংখ্য খানাখন্দ। খানাখন্দে ভরপুর বেহাল দশার ময়মনসিংহের ত্রিশাল-ফুলবাড়িয়া সড়কের ২০ কিলোমিটারের ওই সড়কের প্রায় ছয় কিলোমিটারের জনসাধারন ও যানবাহন চলাচলে দেখা দেয় চরম ভোগান্তি। ২০১৮ সালে ১২ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে শুরু হয় ওই সড়কের সংস্কার কাজ। দফায় দফায় সময় বাড়িয়ে পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি সংস্কারকাজ।জানা যায়, ত্রিশাল উপজেলার বৈলর মোড় থেকে ফুলবাড়িয়া উপজেলা সদরের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। ওই সড়কটি ফুলবাড়িয়া উপজেলা সদরে প্রবেশে ত্রিশালবাসির যোগাযোগ ব্যবস্থাটা যতটা সহজতর করেছে, ততটা সহজতর করেছে ঢাকাগামী ফুলবাড়িয়াবাসির চলাচলে। ওই ২০ কিলোমিটার সড়ক সংষ্কার ও রক্ষানাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। ত্রিশালের বৈলর মোড় থেকে ফুলবাড়িয়া উপজেলার সীমানা পর্যন্ত সড়কটির সাড়ে ৫ কিলোমিটার পড়েছে ত্রিশাল উপজেলার অংশে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ওই সড়কে অসংখ্য খানাখন্দে পানি জমে অচলাবস্থার সৃষ্টি হলে ২০১৬ সালে সংস্কার কাজের টেন্ডার হয়েও তা বাতিল হয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে আবারও সড়কটি পুনঃনির্মানে টেন্ডার হয়। ১২ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কের পুনঃনির্মাণের কাজটি পান মেসার্স ঢালি কন্সট্রাকশনের সত্বাধিকারি নাসিমুল গনি। ওই বছরের ২৬ জুন থেকে ২০১৯ সালের ১৩ আগস্টের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করার কথা ছিল। ঠিকাদারের অপারগতায় পরপর কয়েক দফায় সময় বর্ধিত হয়। কিন্তু দফায় দফায় সময় বাড়িয়েও মাত্র ৪৫ শতাংশ কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।পাঁচ বছরেও ওই সড়কের সংস্কারকাজ শেষ না হওয়ায় দ্রুত সড়কের সংস্কার দাবিতে আন্দোলনেও নেমেছিলেন ত্রিশাল ও ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভোক্তভোগি জনসাধারন। দীর্ঘসময়েও সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও এলজিইডি কর্তৃপক্ষের ওপর চরম ক্ষোভপ্রকাশ করেন স্থানীয় এলাকাবাসি ও ভোক্তভোগি পরিবহন যাত্রীরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাড়ে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে ৩ কিলোমিটার পরিমান সড়কে সুরকি ফেলে শুধুমাত্র রোলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এখনো গাইড ওয়াল নির্মান হয়নি অনেকস্থানে। সুরকি ফেলা হয়নি বা হয়েছে এমনস্থানেও অসংখ্য খানাখন্দ আর হাঁটুসম গর্তে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ এপথে চলাচলকারী দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ ও শতশত যানবাহন।ধানীখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের তানিয়া, আয়েশা, নাসিমা, বাবলু, আপেল, বজলু, নিক্সনসহ শিক্ষার্থীরা জানান, শুকনো মৌসুমে ধুলোবালু মেখে কোন রকমে চলাচল করতে পারলেও বর্ষাকালে চলাচলা পুরোপুরি অনুপযোগি হয়ে পড়ে এই সড়ক। কাঁদাজলে একাকার হয় পুরো সড়ক।

স্থানীয় মোতাহার আলী, দুলাল মিয়া, ধানীখোলা বাজারের ব্যবসায়ি নাহিদ খসরুসহ ভোক্তভোগিরা জানান, প্রায় একযুগ ধরে আমরা অসহনীয় ভোগান্তির শিকার। এ ভোগান্তির শেষ কবে তা জানিনা। ঠিকাদারীপ্রতিষ্ঠান ও এলজিইডি কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতির কারনেই গত পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি ত্রিশাল-ফুলবাড়িয়া সড়কের নির্মাণ কাজ। উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, বর্তমান সময় পর্যন্ত ৪৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে টেন্ডার বাতিলের প্রক্রিয়াধীন। চুক্তি বাতিলের চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।

ট্যাগস :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

ত্রিশাল-ফুলবাড়িয়া সড়কে চরম দুর্ভোগ ঠিকাদারের গাফিলতিতে ৫ বছরেও শেষ হয়নি সড়কের সংস্কারকাজ

আপলোড সময়: ১১:৩৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০২৩

মোহাম্মদ সেলিম,ত্রিশাল ময়মনসিংহঃ- পিচঢালা সড়কজুড়ে ছিল অসংখ্য খানাখন্দ। খানাখন্দে ভরপুর বেহাল দশার ময়মনসিংহের ত্রিশাল-ফুলবাড়িয়া সড়কের ২০ কিলোমিটারের ওই সড়কের প্রায় ছয় কিলোমিটারের জনসাধারন ও যানবাহন চলাচলে দেখা দেয় চরম ভোগান্তি। ২০১৮ সালে ১২ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে শুরু হয় ওই সড়কের সংস্কার কাজ। দফায় দফায় সময় বাড়িয়ে পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি সংস্কারকাজ।জানা যায়, ত্রিশাল উপজেলার বৈলর মোড় থেকে ফুলবাড়িয়া উপজেলা সদরের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। ওই সড়কটি ফুলবাড়িয়া উপজেলা সদরে প্রবেশে ত্রিশালবাসির যোগাযোগ ব্যবস্থাটা যতটা সহজতর করেছে, ততটা সহজতর করেছে ঢাকাগামী ফুলবাড়িয়াবাসির চলাচলে। ওই ২০ কিলোমিটার সড়ক সংষ্কার ও রক্ষানাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। ত্রিশালের বৈলর মোড় থেকে ফুলবাড়িয়া উপজেলার সীমানা পর্যন্ত সড়কটির সাড়ে ৫ কিলোমিটার পড়েছে ত্রিশাল উপজেলার অংশে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ওই সড়কে অসংখ্য খানাখন্দে পানি জমে অচলাবস্থার সৃষ্টি হলে ২০১৬ সালে সংস্কার কাজের টেন্ডার হয়েও তা বাতিল হয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে আবারও সড়কটি পুনঃনির্মানে টেন্ডার হয়। ১২ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কের পুনঃনির্মাণের কাজটি পান মেসার্স ঢালি কন্সট্রাকশনের সত্বাধিকারি নাসিমুল গনি। ওই বছরের ২৬ জুন থেকে ২০১৯ সালের ১৩ আগস্টের মধ্যে কাজ সমাপ্ত করার কথা ছিল। ঠিকাদারের অপারগতায় পরপর কয়েক দফায় সময় বর্ধিত হয়। কিন্তু দফায় দফায় সময় বাড়িয়েও মাত্র ৪৫ শতাংশ কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।পাঁচ বছরেও ওই সড়কের সংস্কারকাজ শেষ না হওয়ায় দ্রুত সড়কের সংস্কার দাবিতে আন্দোলনেও নেমেছিলেন ত্রিশাল ও ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভোক্তভোগি জনসাধারন। দীর্ঘসময়েও সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও এলজিইডি কর্তৃপক্ষের ওপর চরম ক্ষোভপ্রকাশ করেন স্থানীয় এলাকাবাসি ও ভোক্তভোগি পরিবহন যাত্রীরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাড়ে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে ৩ কিলোমিটার পরিমান সড়কে সুরকি ফেলে শুধুমাত্র রোলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এখনো গাইড ওয়াল নির্মান হয়নি অনেকস্থানে। সুরকি ফেলা হয়নি বা হয়েছে এমনস্থানেও অসংখ্য খানাখন্দ আর হাঁটুসম গর্তে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ এপথে চলাচলকারী দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ ও শতশত যানবাহন।ধানীখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের তানিয়া, আয়েশা, নাসিমা, বাবলু, আপেল, বজলু, নিক্সনসহ শিক্ষার্থীরা জানান, শুকনো মৌসুমে ধুলোবালু মেখে কোন রকমে চলাচল করতে পারলেও বর্ষাকালে চলাচলা পুরোপুরি অনুপযোগি হয়ে পড়ে এই সড়ক। কাঁদাজলে একাকার হয় পুরো সড়ক।

স্থানীয় মোতাহার আলী, দুলাল মিয়া, ধানীখোলা বাজারের ব্যবসায়ি নাহিদ খসরুসহ ভোক্তভোগিরা জানান, প্রায় একযুগ ধরে আমরা অসহনীয় ভোগান্তির শিকার। এ ভোগান্তির শেষ কবে তা জানিনা। ঠিকাদারীপ্রতিষ্ঠান ও এলজিইডি কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতির কারনেই গত পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি ত্রিশাল-ফুলবাড়িয়া সড়কের নির্মাণ কাজ। উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, বর্তমান সময় পর্যন্ত ৪৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে টেন্ডার বাতিলের প্রক্রিয়াধীন। চুক্তি বাতিলের চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।