ময়মনসিংহ ১১:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনে বিদ্রোহীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা আওয়ামী লীগের

দৈনিক মুক্তকণ্ঠ
  • আপলোড সময়: ১১:৫৯:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ৩২৯ বার পড়া হয়েছে

মুক্তকণ্ঠ ডেস্কঃ- আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন, ১৭ ডিসেম্বরছবি: পিআইডি

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীসহ দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতা-কর্মীকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। গতকাল রাতে সভা শেষে গণভবনের ফটকে আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান। সভায় দলের জাতীয় সম্মেলনের বাজেটও অনুমোদন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি অনুসরণ করে এবারের সম্মেলনের বাজেট ৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১৯ সালের সর্বশেষ সম্মেলনের বাজেট ছিল ৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের জন্য তিন সদস্যের নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কমিটির সদস্যরা হলেন ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সাহাবুদ্দিন ও মশিউর রহমান।
জাতীয় কমিটির বৈঠকের শুরুতে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সূচনা বক্তৃতা করেন। এরপর নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র জানায়, জাতীয় কমিটির বৈঠকে জেলা পর্যায়ের প্রবীণ সদস্যদের বেশি বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। সভা শেষেও প্রধানমন্ত্রী প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, অধিকাংশ বক্তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর সরকারের কাজের প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে তাঁরা ভবিষ্যতেও শেখ হাসিনাই যাতে দল ও সরকারের নেতৃত্বে থাকেন, সেই ইচ্ছার কথা বলেন। এক সদস্য প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে দলীয় পদে আনার দাবি করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, জয় ও পুতুল পরিপক্ব। সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া না হওয়ার বিষয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি তাঁদের ওপর কোনো জোর খাটাবেন না।
এক নেতা চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন না হওয়ার বিষয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। দলীয় সভাপতি আগামী জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারিতে সম্মেলন করার নির্দেশনা দেন।

বৈঠকে কেন্দ্রীয় কমিটির চার-পাঁচজন নেতা বক্তৃতা করেন। তাঁদের প্রায় সবাই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী কিংবা দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে সাময়িক বহিষ্কার করা নেতাদের ক্ষমা করে দেওয়ার আহ্বান জানান। জেলা থেকে আসা সদস্যরাও তাতে সায় দেন।
নেতারা বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ সময় বহিষ্কৃতদের ফিরিয়ে না আনলে দল দুর্বল হয়ে যাবে। এ পর্যায়ে যেসব বহিষ্কৃত নেতা ক্ষমার জন্য আবেদন করেছেন, তাঁদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। আর ভবিষ্যতে যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁদের জাতীয় কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে ক্ষমা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সারা দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় দলীয় প্রার্থী পরাজিত হন। সে সময় দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাসহ অন্য নেতারা শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেই অবস্থানে থাকতে পারেনি আওয়ামী লীগ।
জাতীয় কমিটির একজন সদস্য বৈঠকে দাবি করেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যে দুই লাখ মা-বোনের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের তথ্য বলা হয়, প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে বেশি। চার লাখের মতো। তাঁর কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য–প্রমাণ আছে।

বৈঠকে জাতীয় কমিটির সদস্যরা দল ও সরকারের স্থানীয় নানা বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন। দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এর জবাব দেন।
আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্যসংখ্যা ১৮০। ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি, ৭৮টি সাংগঠনিক জেলা থেকে একজন করে প্রতিনিধি ও সভাপতির নির্বাচিত ২১ জন নিয়ে জাতীয় কমিটি গঠিত হয়। ২২ ডিসেম্বর দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সর্বশেষ বৈঠক হবে। আর ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলন।

সূত্রঃ প্রথম আলো

ট্যাগস :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

নির্বাচনে বিদ্রোহীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা আওয়ামী লীগের

আপলোড সময়: ১১:৫৯:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২২

মুক্তকণ্ঠ ডেস্কঃ- আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন, ১৭ ডিসেম্বরছবি: পিআইডি

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীসহ দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতা-কর্মীকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। গতকাল রাতে সভা শেষে গণভবনের ফটকে আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান। সভায় দলের জাতীয় সম্মেলনের বাজেটও অনুমোদন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি অনুসরণ করে এবারের সম্মেলনের বাজেট ৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১৯ সালের সর্বশেষ সম্মেলনের বাজেট ছিল ৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের জন্য তিন সদস্যের নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কমিটির সদস্যরা হলেন ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সাহাবুদ্দিন ও মশিউর রহমান।
জাতীয় কমিটির বৈঠকের শুরুতে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সূচনা বক্তৃতা করেন। এরপর নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র জানায়, জাতীয় কমিটির বৈঠকে জেলা পর্যায়ের প্রবীণ সদস্যদের বেশি বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। সভা শেষেও প্রধানমন্ত্রী প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, অধিকাংশ বক্তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর সরকারের কাজের প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে তাঁরা ভবিষ্যতেও শেখ হাসিনাই যাতে দল ও সরকারের নেতৃত্বে থাকেন, সেই ইচ্ছার কথা বলেন। এক সদস্য প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে দলীয় পদে আনার দাবি করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, জয় ও পুতুল পরিপক্ব। সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া না হওয়ার বিষয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি তাঁদের ওপর কোনো জোর খাটাবেন না।
এক নেতা চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন না হওয়ার বিষয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। দলীয় সভাপতি আগামী জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারিতে সম্মেলন করার নির্দেশনা দেন।

বৈঠকে কেন্দ্রীয় কমিটির চার-পাঁচজন নেতা বক্তৃতা করেন। তাঁদের প্রায় সবাই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী কিংবা দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে সাময়িক বহিষ্কার করা নেতাদের ক্ষমা করে দেওয়ার আহ্বান জানান। জেলা থেকে আসা সদস্যরাও তাতে সায় দেন।
নেতারা বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ সময় বহিষ্কৃতদের ফিরিয়ে না আনলে দল দুর্বল হয়ে যাবে। এ পর্যায়ে যেসব বহিষ্কৃত নেতা ক্ষমার জন্য আবেদন করেছেন, তাঁদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। আর ভবিষ্যতে যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁদের জাতীয় কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে ক্ষমা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সারা দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় দলীয় প্রার্থী পরাজিত হন। সে সময় দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাসহ অন্য নেতারা শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেই অবস্থানে থাকতে পারেনি আওয়ামী লীগ।
জাতীয় কমিটির একজন সদস্য বৈঠকে দাবি করেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যে দুই লাখ মা-বোনের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের তথ্য বলা হয়, প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে বেশি। চার লাখের মতো। তাঁর কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য–প্রমাণ আছে।

বৈঠকে জাতীয় কমিটির সদস্যরা দল ও সরকারের স্থানীয় নানা বিষয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন। দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এর জবাব দেন।
আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্যসংখ্যা ১৮০। ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি, ৭৮টি সাংগঠনিক জেলা থেকে একজন করে প্রতিনিধি ও সভাপতির নির্বাচিত ২১ জন নিয়ে জাতীয় কমিটি গঠিত হয়। ২২ ডিসেম্বর দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সর্বশেষ বৈঠক হবে। আর ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলন।

সূত্রঃ প্রথম আলো