ময়মনসিংহ ০২:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিশু হত্যা মামলায় ১৪ বছর পর ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

দৈনিক মুক্তকণ্ঠ
  • আপলোড সময়: ১১:০৫:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২
  • / ২২৯ বার পড়া হয়েছে

নিরেন দাস,জয়পুরহাট প্রতিনিধি:- জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শিশু হত্যা মামলায় প্রায় ১৪ বছর পর ৪ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। এছাড়া সশ্রম কারাদন্ড প্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নূরুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন। কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জেলার ক্ষেতলাল পৌর এলাকার সূর্যবান গ্রামের মৃত.মোবারক মন্ডলের ছেলে বাবলু মন্ডল,একই গ্রামের মৃত.ইংরাজ মন্ডলের ছেলে আমিনুল ইসলাম ওরফে লালু,মৃত.আঃ কাদেরের ছেলে আব্দুল হামিদ ও ফিতা মিয়ার ছেলে কাজল।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ক্ষেতলাল উপজেলার সূর্যবান গ্রামের ওবাইদুর রহমান গত ২০০৮ সালের ৩ মে সকাল ৮ টায় রাজমিস্ত্রী কাজের সন্ধানে এলাকার বাহিরে যান এবং শিশুটির মা শিরিনা আক্তার ঝিয়ের কাজ করার জন্য ক্ষেতলালের জাকস অফিসে যান। প্রতিদিনের ন্যায় ওবাইদুর রহমানের শ্বাশুড়ীর কাছে তার ৮ বছরের পুত্র সন্তান শিশু তানভীর ও ১০ বছরের মেয়ে হাবিবাকে রেখে যান। ওই দিন সন্ধ্যা ৭ টায় ওবাইদুর ও তার স্ত্রী কাজ শেষে বাড়িতে ফিরে দেখে তার শিশু পুত্র তানভীর বাড়িতে নেই। সে সময় শিশুর বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজনরা চারদিকে খোঁজাখুজি করে শিশুটির কোন সন্ধান পেলেও। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার সময় ওবাইদুর রহমান এর বাড়ির পশ্চিম পার্শে জনৈক আনিছুর রহমানের পুকুরে পানিতে শিশু তানভীরের মরদেহটি স্থানীয়রা দেখতে পায় এবং তাদের সহযোগিতায় পুকুর থেকে শিশু তানভীরের মরদেহটি উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসলে এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।
এলাকাবাসী ও নিহত শিশুর পরিবার জানান,কারাদণ্ড প্রাপ্তদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের চলে আসছিলো। তারা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ওবাইদুর রহমান এর পরিবারকে অপূরনীয় ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে তার পুত্র সন্তান শিশু নৃশংসভাবে গলা টিপে হত্যা করে পুকুরে ফেলা হয়। ঘটনার রাতে আসামিরা বাদীর বাড়ির আশেপাশে ঘুরা ফিরা করতে দেখে। এই ব্যাপারে শিশুটির বাবা ওবাইদুর রহমান বাদী হয়ে ঘটনারদিন রাতে ক্ষেতলাল থানায় আসামীদের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে ক্ষেতলাল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সিদ্দিকুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে গত ১২/০৮/২০০৮-ইং সালে তারিখে আসামীদের বিরুদ্ধে অত্র মামলায় অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
ওই মামলায় ১০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জন সাক্ষীকে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন,এ্যাড.নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল-পিপি ও এ্যাড.গকুল চন্দ্র মন্ডল-এপিপি। আসামী পক্ষ থেকে মামলা পরিচালনা করেন এ্যাড.এ, ই, এম খলিলুর রহমান,এ্যাড.মোস্তাফিজুর রহমান ও এ্যাড.আহসান হাবীব চপল প্রমুখ।
এবিষয়ে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী এ্যাড.নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল-পিপি,মঙ্গলবার সকালে ৪ জন আসামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ট্যাগস :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

শিশু হত্যা মামলায় ১৪ বছর পর ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

আপলোড সময়: ১১:০৫:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২

নিরেন দাস,জয়পুরহাট প্রতিনিধি:- জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শিশু হত্যা মামলায় প্রায় ১৪ বছর পর ৪ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। এছাড়া সশ্রম কারাদন্ড প্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নূরুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন। কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জেলার ক্ষেতলাল পৌর এলাকার সূর্যবান গ্রামের মৃত.মোবারক মন্ডলের ছেলে বাবলু মন্ডল,একই গ্রামের মৃত.ইংরাজ মন্ডলের ছেলে আমিনুল ইসলাম ওরফে লালু,মৃত.আঃ কাদেরের ছেলে আব্দুল হামিদ ও ফিতা মিয়ার ছেলে কাজল।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ক্ষেতলাল উপজেলার সূর্যবান গ্রামের ওবাইদুর রহমান গত ২০০৮ সালের ৩ মে সকাল ৮ টায় রাজমিস্ত্রী কাজের সন্ধানে এলাকার বাহিরে যান এবং শিশুটির মা শিরিনা আক্তার ঝিয়ের কাজ করার জন্য ক্ষেতলালের জাকস অফিসে যান। প্রতিদিনের ন্যায় ওবাইদুর রহমানের শ্বাশুড়ীর কাছে তার ৮ বছরের পুত্র সন্তান শিশু তানভীর ও ১০ বছরের মেয়ে হাবিবাকে রেখে যান। ওই দিন সন্ধ্যা ৭ টায় ওবাইদুর ও তার স্ত্রী কাজ শেষে বাড়িতে ফিরে দেখে তার শিশু পুত্র তানভীর বাড়িতে নেই। সে সময় শিশুর বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজনরা চারদিকে খোঁজাখুজি করে শিশুটির কোন সন্ধান পেলেও। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার সময় ওবাইদুর রহমান এর বাড়ির পশ্চিম পার্শে জনৈক আনিছুর রহমানের পুকুরে পানিতে শিশু তানভীরের মরদেহটি স্থানীয়রা দেখতে পায় এবং তাদের সহযোগিতায় পুকুর থেকে শিশু তানভীরের মরদেহটি উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসলে এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।
এলাকাবাসী ও নিহত শিশুর পরিবার জানান,কারাদণ্ড প্রাপ্তদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের চলে আসছিলো। তারা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ওবাইদুর রহমান এর পরিবারকে অপূরনীয় ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে তার পুত্র সন্তান শিশু নৃশংসভাবে গলা টিপে হত্যা করে পুকুরে ফেলা হয়। ঘটনার রাতে আসামিরা বাদীর বাড়ির আশেপাশে ঘুরা ফিরা করতে দেখে। এই ব্যাপারে শিশুটির বাবা ওবাইদুর রহমান বাদী হয়ে ঘটনারদিন রাতে ক্ষেতলাল থানায় আসামীদের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে ক্ষেতলাল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সিদ্দিকুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে গত ১২/০৮/২০০৮-ইং সালে তারিখে আসামীদের বিরুদ্ধে অত্র মামলায় অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
ওই মামলায় ১০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জন সাক্ষীকে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন,এ্যাড.নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল-পিপি ও এ্যাড.গকুল চন্দ্র মন্ডল-এপিপি। আসামী পক্ষ থেকে মামলা পরিচালনা করেন এ্যাড.এ, ই, এম খলিলুর রহমান,এ্যাড.মোস্তাফিজুর রহমান ও এ্যাড.আহসান হাবীব চপল প্রমুখ।
এবিষয়ে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী এ্যাড.নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল-পিপি,মঙ্গলবার সকালে ৪ জন আসামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।