ষ্টাফ রিপোর্টারঃ- ময়মনসিংহের ভালুকায় যৌতুকের দাবিতে ও ডাক্তারী পরীক্ষায় কন্যা সন্তান আসায় জান্নাতুল ফেরদৌস (২২) নামে ৭ মাসের এক অন্তসত্তা স্ত্রীকে মারধর করে স্বামীর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
থানায় দেয়া অভিযোগে জানা যায়, ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে শাহাদৎ হোসেনের সাথে এক বছর আগে পাশের গফরগাঁও পাগলা থানার বলদী টানপাড়ার তাফাজ্জল হোসেনের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই পাঁচলাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলো স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। এমনকি ওই টাকার জন্য প্রায়ই জান্নাতুলের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো। ইতোমধ্যে জান্নাতুল অন্তসত্তা হলে, ছেলে সন্তান না হলে তাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিবে বলে হুমকী দেয় শাহাদৎ। এরই জের হিসেবে ১৪ নভেম্বর সকালে জান্নাতুলকে ময়মনসিংহে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় আল্ট্রাসনোগ্রামের জন্য। পরে যখন জানতে পারে কন্যা সন্তান হবে, তখন থেকেই জান্নাতুলকে মানসিক নির্যাতন শুরু করা হয়। এমনকি বাড়িতে নিয়ে কন্যা সন্তান হবে বলে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে এবং পূর্বের দাবিকৃত ওই পাঁচলাখ টাকা বাবার বাড়ি থেকে এনে দিতে বলা হয়। কিন্তু জান্নাতুল তাদের দাবির বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করায় তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং হুমকী দেয়া হয় যে, পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে না আসলে তাকে তালাক দিয়ে চিরদিনের জন্য বিদায় করে দেয়া হবে। পরে পরিবারের লোকজন জান্নতুলকে ভালুকা সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা করেন।
নির্যাতনের শিকার জান্নাতুলের পিতা তাফাজ্জল হোসেন জানান, তার মেয়েকে যৌতুক হিসেবে পাঁচ লাখ টাকার জন্য বিয়ের পর থেকেই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। এখন কন্যা সন্তান হবে বলে মারধর করে তারা বাড়ি থেকেই তাড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় ভালুকা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
অভিযুক্ত শাহাদৎ হোসেন জানান, তার স্ত্রী বিয়ের পর থেকেই মোবাইলে বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলতো। এমনকি পেটে তার সন্তান আসার পরও সে বদলায়নি। এমনকি তার ঘর করবেনা বলে হুমকী দিতো। এ নিয়ে তার সাথে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হতো। ঘটনার দিন ভোর রাতে স্ত্রীর কাছে গচ্ছিত চার লাখ ১০হাজার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান।
ভালুকা মডেল থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, ওই ঘটনায় দুই পক্ষই অভিযোগ দিয়েছেন, তাই উভয় পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। ফয়সালা না হলে মামলা নেয়া হবে।