শাকিল আহমেদ, পিরোজপুর প্রতিনিধি:- পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বামীর সাথে আপন বড় ভাইয়ের স্ত্রীর (ভাবি) পরকিয়ার অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় স্বামী ও তার প্রেমিকা (আপন ভাবি) মিলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে শাম্মী আক্তার (৪০) নামের এক বিউটিপার্লার ব্যাবসায়ীকে। সোমবার দুপুরে পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স থেকে দুই সন্তানের জননী শাম্মি আক্তারের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর জেলা মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সাইম আলম (১৭) বাদী হয়ে মঙ্গলবার সকালে মঠবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে মায়ের দ্বিতীয় স্বামী শেখ সিরাজুস সালেকিন (৩৩) ও আপন মামি শিক্ষিকা আয়শা খানম (৫০) কে পুলিশ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে। গ্রেপ্তারকৃত শেখ সিরাজুস সালেকীন লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার দরবেশপুর গ্রামের শেখ মোহম্মদ আলীর পুত্র এবং আয়শা খানম শহরের কে এম লতীফ ইনস্টিটিউশনের ইংরেজী বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা ও পার্শ্ববর্তী শরণখোলা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের ব্যাংক কর্মকর্তা এমাদুল হকের স্ত্রী।
মামলা সূত্রে যানাযায়, দীর্ঘ ১৩ বছর আগে প্রথম স্বামী ফিরোজ আলমের সাথে বিয়ে বিচ্ছেদের পর দু’সন্তান নিয়ে থানা পাড়ার জনৈক মাসুম মিয়ার বাসায় ভাড়ায় থাকত এবং পৌর শহরের কেএম লতীফ সুপার মার্কেটে শাম্মি বিউটি পার্লার নামে একটি ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। গত দু বছর আগে সালেকিনকে দ্বিতীয় বিয়ে করে শাম্মী। শাম্মী ও সালেকিনের বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে স্বামী সালেকিন রোববার সকালে ঢাকা থেকে মঠবাড়িয়া আসেন এবং ওই রাতে শাম্মীর স্বামী সালেকিন ও ভাবি আয়শা খানম তাদের থানাপড়ার ভাড়াটিয়া বাসায় অবস্থান করছিলেন। রাতের খাবার শেষে শাম্মী স্বামীকে নিয়ে নিজ কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। পাশের আলাদা রুমে ভাবি আয়শা খানম ঘুমান। রাত তিনটার দিকে শাম্মী ঘুম থেকে জেগে স্বামীকে বিছানায় না পেয়ে রুম থেকে বের হয়ে ভাবির রুমে ঢুকে দুজনকে এক সাথে দেখতে পায়। এনিয়ে গালাগাল করলে স্বামী ও ভাবি দুজনে মিয়ে শাম্মীর মুখ চেপে ধরে। একপর্যায় দুজনে মিলে শাম্মীকে বালিশ দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। সোমবার সকালে স্বামী সালেকীন ও আয়শা ননদ শাম্মীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় তারা হার্ট এট্যাক করে শাম্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচারণা চালায়। মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহা. নূরুল ইসলাম বাদল জানান, ঘটনার পরপরই সিরাজুল সালেকীন ও আয়শা খানমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সালেকীন শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে হত্যা মামলা দায়েরের পর তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়।