ময়মনসিংহ ১০:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালুকায় ২৯ বছর পর গ্রামে ফিরলেন সিদ্দিকুর রহমান

দৈনিক মুক্তকণ্ঠ
  • আপলোড সময়: ০৭:২৫:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল ২০২২
  • / ২৮০ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি: বাড়িতে স্ত্রী রাজিয়া ও শারমিন সুলতানা (সাদিকা) নামের দুই বছরের এক ফুটফুটে কন্যা সন্তান রেখে কাউকে কিছু না বলে হারিয়ে যান সিদ্দিকুর রহমান। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ। বহু খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মেলেনি তার। হারিয়ে যাওয়ার প্রায় ২৯ বছর পর অবশেষে নিজ ঠিকানায় ফিরেছেন সেই সিদ্দিকুর রহমান। বাড়ী থেকে একা একা বের হয়ে গেলেও নিজ ঠিকানায় ফিরলেন আরও দুই ছেলে মেয়ে, স্ত্রী ও শাশুরীকে নিয়ে। এখন সিদ্দিকুর রহমানের বয়স প্রায় ৬৫। এমনই ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার রাজৈ ইউনিয়নের খুর্দ গ্রামে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভালুকা উপজেলার রাজৈ ইউনিয়নের খুর্দ গ্রামের মাওলানা আলাউদ্দিনের ৫ ছেলে ৩ মেয়ের মধ্যে ৬ষ্ঠ ছেলে সিদ্দিকুর রহমান। ১৯৯২ সালে হারিয়ে যান সিদ্দিকুর রহমান। অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও তাকে পায়নি তার পরিবার। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ২৯টি বছর। এই দীর্ঘ সময় কাটান সিলেটের সুনামগঞ্জের বিভিনś এলাকায়। সেখানে গিয়ে বিয়ে করে সংসার সাজান সিদ্দিক। এরপর হঠাৎ পিতৃভূমির কথা মনে পড়ায় স্ত্রী সন্তান সহ গত ২১ মার্চ ভালুকার গ্রামের বাড়ী খুর্দ চলে আসেন।
সিদ্দিকের ছোট ভাই মাওলানা মিজানুর রহমান ফরাজী জানান, আমার ভাইকে দীর্ঘদিন পর ফিরে পেয়ে মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।
সিদ্দিকের প্রথম স্ত্রী রাজিয়া জানান, গফরগাঁও যাওয়ার কথা বলে বাড়ী থেকে বেরিয়ে যায় পরে আর বাড়ীতে আসেনি, আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন খোঁজ পাইনি, হঠাৎ ২৯ বছর পর আবার বাড়ীতে এসেছে। আমি এতে অনেক খুশি কারণ আমি যার আশায় আর কোন সংসার করিনি সে ফিরে আসায় আমার সংসার পূর্ণ হয়েছে।
সিদ্দিকের ভাতিজা দুলু ফরাজী জানান, আমার চাচাকে ফিরে পেয়ে অনেক ভালো লাগছে। আমরা তাকে বাকীটা সময় আমাদের কাছেই রাখতে চাই।
এতোদিন পরে বাড়ী ফেরার ব্যাপারে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি মাঝে মাঝে অনেক কিছু ভুলে যাই। কি কারণে বাড়ী থেকে চলে গিয়েছিলাম তা মনে নেই। তবে আমার ভাই বোনদের সবার কথা মনে পড়ায় আমি চলে এসেছি। আমি আমার বাড়ীতেই থাকবো আর কোথাও যাবো না।
১১নং রাজৈ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাদশা জানান, সিদ্দিকুর রহমান ১৯৯২ সালে হারিয়ে যান দীর্ঘ ২৯ বছর খোঁজাখুঁজির পরে তার পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন সিদ্দিকুর রহমান সিলেটের সুনামগঞ্জে দ্বিতীয় স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন পরে সেখান থেকে তাকে তাদের বাড়ীতে নিয়ে আসেন।
সিদ্দিকুর রহমানের বাড়ী ফেরায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্ট্রি হয়েছে। প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে তার আত্বীয় স্বজন ও প্রতিবেশীরা তাদেরকে দেখতে আসছেন।

ট্যাগস :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

ভালুকায় ২৯ বছর পর গ্রামে ফিরলেন সিদ্দিকুর রহমান

আপলোড সময়: ০৭:২৫:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল ২০২২

বিশেষ প্রতিনিধি: বাড়িতে স্ত্রী রাজিয়া ও শারমিন সুলতানা (সাদিকা) নামের দুই বছরের এক ফুটফুটে কন্যা সন্তান রেখে কাউকে কিছু না বলে হারিয়ে যান সিদ্দিকুর রহমান। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ। বহু খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মেলেনি তার। হারিয়ে যাওয়ার প্রায় ২৯ বছর পর অবশেষে নিজ ঠিকানায় ফিরেছেন সেই সিদ্দিকুর রহমান। বাড়ী থেকে একা একা বের হয়ে গেলেও নিজ ঠিকানায় ফিরলেন আরও দুই ছেলে মেয়ে, স্ত্রী ও শাশুরীকে নিয়ে। এখন সিদ্দিকুর রহমানের বয়স প্রায় ৬৫। এমনই ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার রাজৈ ইউনিয়নের খুর্দ গ্রামে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভালুকা উপজেলার রাজৈ ইউনিয়নের খুর্দ গ্রামের মাওলানা আলাউদ্দিনের ৫ ছেলে ৩ মেয়ের মধ্যে ৬ষ্ঠ ছেলে সিদ্দিকুর রহমান। ১৯৯২ সালে হারিয়ে যান সিদ্দিকুর রহমান। অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও তাকে পায়নি তার পরিবার। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ২৯টি বছর। এই দীর্ঘ সময় কাটান সিলেটের সুনামগঞ্জের বিভিনś এলাকায়। সেখানে গিয়ে বিয়ে করে সংসার সাজান সিদ্দিক। এরপর হঠাৎ পিতৃভূমির কথা মনে পড়ায় স্ত্রী সন্তান সহ গত ২১ মার্চ ভালুকার গ্রামের বাড়ী খুর্দ চলে আসেন।
সিদ্দিকের ছোট ভাই মাওলানা মিজানুর রহমান ফরাজী জানান, আমার ভাইকে দীর্ঘদিন পর ফিরে পেয়ে মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।
সিদ্দিকের প্রথম স্ত্রী রাজিয়া জানান, গফরগাঁও যাওয়ার কথা বলে বাড়ী থেকে বেরিয়ে যায় পরে আর বাড়ীতে আসেনি, আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন খোঁজ পাইনি, হঠাৎ ২৯ বছর পর আবার বাড়ীতে এসেছে। আমি এতে অনেক খুশি কারণ আমি যার আশায় আর কোন সংসার করিনি সে ফিরে আসায় আমার সংসার পূর্ণ হয়েছে।
সিদ্দিকের ভাতিজা দুলু ফরাজী জানান, আমার চাচাকে ফিরে পেয়ে অনেক ভালো লাগছে। আমরা তাকে বাকীটা সময় আমাদের কাছেই রাখতে চাই।
এতোদিন পরে বাড়ী ফেরার ব্যাপারে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি মাঝে মাঝে অনেক কিছু ভুলে যাই। কি কারণে বাড়ী থেকে চলে গিয়েছিলাম তা মনে নেই। তবে আমার ভাই বোনদের সবার কথা মনে পড়ায় আমি চলে এসেছি। আমি আমার বাড়ীতেই থাকবো আর কোথাও যাবো না।
১১নং রাজৈ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাদশা জানান, সিদ্দিকুর রহমান ১৯৯২ সালে হারিয়ে যান দীর্ঘ ২৯ বছর খোঁজাখুঁজির পরে তার পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন সিদ্দিকুর রহমান সিলেটের সুনামগঞ্জে দ্বিতীয় স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন পরে সেখান থেকে তাকে তাদের বাড়ীতে নিয়ে আসেন।
সিদ্দিকুর রহমানের বাড়ী ফেরায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্ট্রি হয়েছে। প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে তার আত্বীয় স্বজন ও প্রতিবেশীরা তাদেরকে দেখতে আসছেন।