ময়মনসিংহ ১১:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৃদ্ধা পিতার সঙ্গে সন্তানের প্রতারনা বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

দৈনিক মুক্তকণ্ঠ
  • আপলোড সময়: ০৯:২৫:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ মার্চ ২০২২
  • / ২৯৪ বার পড়া হয়েছে

মোহাম্মদ সেলিম,ত্রিশাল থেকে- প্রতারনার ছলে পিতার নামে জমি কেনার প্রস্তাব দেয় তারই দুইপুত্র। সরল বিশ্বাসে তাতে রাজি হন আশির্ধ্বো পিতা। দলিল লেখকের সহায়তায় ভুয়া কাগজপত্র সৃজন করে দুইভাই। ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে এবং তা পড়ে শোনান দলিল লেখক। আর এভাবেই ওই বৃদ্ধার সাড়ে ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে দুইপুত্র তাদের নিজেদের নামে রেজিস্ট্রি করেন জমি। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ত্রিশালের আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামে। গতকাল সোমবার বিকেলে অভিযুক্ত দলিল লেখক ও দুইপুত্রের বিচার চেয়ে প্রতারনার শিকার বৃদ্ধা নজরুল ইসলাম তার ছয় মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

ত্রিশাল প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নজরুল ইসলাম (৮৫) বলেন, আমার দুই ছেলে জুয়েল আমিন ও জিয়াদুল ইসলাম আমার সম্পদের অংশ থেকে, আমার মেয়েদেরকে বঞ্চিত করতে তারা প্রতারনার আশ্রয় নেয়। প্রতারনা করতে কৌশলে আমার নামে জমি কেনার প্রস্তাব দেয় তারা। সরল বিশ্বাসে তাতে রাজি আমি হই। স্থানীয় বগার বাজার এলাকার শ্রী নিরাঞ্জন চন্দ্র সরকারের ১৪ শতাংশ জমি ক্রয়ের জন্য তার সঙ্গে মূল্য নির্ধারন করে আলাপ আলোচনা সম্পন্ন হয়।
ত্রিশাল সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক মিল্লাত হোসেনের সহায়তায় আমার দুই ছেলে দুটি দলিলপত্র প্রস্তুত করে। তারমধ্যে একটি আমার নামে ভুয়া কাগজপত্র সৃজন করে। গত ২৭ ফেব্রæয়ারি আমি ত্রিশাল সাবরেজিস্ট্রি অফিসে হাজির হলে, আমাকে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে এবং তা পড়ে শোনান দলিল লেখক মিল্লাত হোসেন ওরফে বাবুল। এরপর আমি জমি ক্রয় বাবদ জমির মালিক শ্রী নিরাঞ্জন চন্দ্র সরকারের প্রতিনিধি মুক্তার হাতে ৩৯ লাখ ও রেজিস্ট্রি খরচ বাবদ মিল্লাত হোসেনের হাতে সাড়ে তিন লাখ টাকা তুলে দেই। প্রতারক দলিল লেখক মিল্লাতের কাছে রেজিস্ট্রি দলিলের রশিদ চাইলে তার দুইদিন পর আমার হাতে একটি ভ‚য়া রশিদও ধরিয়ে দেয়। যাতে দাতা হিসেবে শ্রী নিরাঞ্জন চন্দ্র সরকার ও গ্রহিতা হিসেবে আমার নাম উল্লেখ রয়েছে।
অথচ ওই ঘটনার ৭ দিন আগে আমারই দুই ছেলে আমার কাছ থেকে সাড়ে ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ২০ ফেব্রæয়ারি দলিল লেখক মিল্লাত হোসেনের সহায়তায় তাদের নিজেদের নামে জমিটি রেজিস্ট্রি করে নেয়। আমার দুই প্রতারক ছেলে নিজেদের নামে জমিটি রেজিস্ট্রি করেও, ওই জমিতে টানানো সাইনবোর্ডে লিখে রেখেছেন “ ক্রয় সূত্রে এই জমির মালিক নজরুল ইসলাম”
আমি আমার দুই ছেলে জুয়েল আমিন, জিয়াদুল ইসলাম ও দলিল লেখক মিল্লাত হোসেনের প্রতারনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে বিচারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ সময় নজরুল ইসলা‌মের মে‌য়ে জ‌রিনা খাতুন, রিনা খাতুন, চায়না খাতুন, ম‌র্জিনা খাতুন, রোকশানা খাতুন, শার‌মিন আক্তার সহ প‌রিবা‌রের অন‌্যান‌্যরা উপ‌স্থিত ছি‌লেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দলিল লেখক মিল্লাত হোসেন বলেন, আমি নজরুল ইসলামের ছেলেদের কথা মোতাবেক কাজ করেছি। এতে আমার কোন দোষ নেই।

ট্যাগস :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

বৃদ্ধা পিতার সঙ্গে সন্তানের প্রতারনা বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

আপলোড সময়: ০৯:২৫:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ মার্চ ২০২২

মোহাম্মদ সেলিম,ত্রিশাল থেকে- প্রতারনার ছলে পিতার নামে জমি কেনার প্রস্তাব দেয় তারই দুইপুত্র। সরল বিশ্বাসে তাতে রাজি হন আশির্ধ্বো পিতা। দলিল লেখকের সহায়তায় ভুয়া কাগজপত্র সৃজন করে দুইভাই। ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে এবং তা পড়ে শোনান দলিল লেখক। আর এভাবেই ওই বৃদ্ধার সাড়ে ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে দুইপুত্র তাদের নিজেদের নামে রেজিস্ট্রি করেন জমি। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ত্রিশালের আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামে। গতকাল সোমবার বিকেলে অভিযুক্ত দলিল লেখক ও দুইপুত্রের বিচার চেয়ে প্রতারনার শিকার বৃদ্ধা নজরুল ইসলাম তার ছয় মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

ত্রিশাল প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নজরুল ইসলাম (৮৫) বলেন, আমার দুই ছেলে জুয়েল আমিন ও জিয়াদুল ইসলাম আমার সম্পদের অংশ থেকে, আমার মেয়েদেরকে বঞ্চিত করতে তারা প্রতারনার আশ্রয় নেয়। প্রতারনা করতে কৌশলে আমার নামে জমি কেনার প্রস্তাব দেয় তারা। সরল বিশ্বাসে তাতে রাজি আমি হই। স্থানীয় বগার বাজার এলাকার শ্রী নিরাঞ্জন চন্দ্র সরকারের ১৪ শতাংশ জমি ক্রয়ের জন্য তার সঙ্গে মূল্য নির্ধারন করে আলাপ আলোচনা সম্পন্ন হয়।
ত্রিশাল সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক মিল্লাত হোসেনের সহায়তায় আমার দুই ছেলে দুটি দলিলপত্র প্রস্তুত করে। তারমধ্যে একটি আমার নামে ভুয়া কাগজপত্র সৃজন করে। গত ২৭ ফেব্রæয়ারি আমি ত্রিশাল সাবরেজিস্ট্রি অফিসে হাজির হলে, আমাকে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে এবং তা পড়ে শোনান দলিল লেখক মিল্লাত হোসেন ওরফে বাবুল। এরপর আমি জমি ক্রয় বাবদ জমির মালিক শ্রী নিরাঞ্জন চন্দ্র সরকারের প্রতিনিধি মুক্তার হাতে ৩৯ লাখ ও রেজিস্ট্রি খরচ বাবদ মিল্লাত হোসেনের হাতে সাড়ে তিন লাখ টাকা তুলে দেই। প্রতারক দলিল লেখক মিল্লাতের কাছে রেজিস্ট্রি দলিলের রশিদ চাইলে তার দুইদিন পর আমার হাতে একটি ভ‚য়া রশিদও ধরিয়ে দেয়। যাতে দাতা হিসেবে শ্রী নিরাঞ্জন চন্দ্র সরকার ও গ্রহিতা হিসেবে আমার নাম উল্লেখ রয়েছে।
অথচ ওই ঘটনার ৭ দিন আগে আমারই দুই ছেলে আমার কাছ থেকে সাড়ে ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ২০ ফেব্রæয়ারি দলিল লেখক মিল্লাত হোসেনের সহায়তায় তাদের নিজেদের নামে জমিটি রেজিস্ট্রি করে নেয়। আমার দুই প্রতারক ছেলে নিজেদের নামে জমিটি রেজিস্ট্রি করেও, ওই জমিতে টানানো সাইনবোর্ডে লিখে রেখেছেন “ ক্রয় সূত্রে এই জমির মালিক নজরুল ইসলাম”
আমি আমার দুই ছেলে জুয়েল আমিন, জিয়াদুল ইসলাম ও দলিল লেখক মিল্লাত হোসেনের প্রতারনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে বিচারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ সময় নজরুল ইসলা‌মের মে‌য়ে জ‌রিনা খাতুন, রিনা খাতুন, চায়না খাতুন, ম‌র্জিনা খাতুন, রোকশানা খাতুন, শার‌মিন আক্তার সহ প‌রিবা‌রের অন‌্যান‌্যরা উপ‌স্থিত ছি‌লেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দলিল লেখক মিল্লাত হোসেন বলেন, আমি নজরুল ইসলামের ছেলেদের কথা মোতাবেক কাজ করেছি। এতে আমার কোন দোষ নেই।