শাকিল আহমেদ,পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় নিজের বাল্য বিয়ে নিজে বন্ধ করে সংবর্ধিত হয়েছেন নুশরাত জাহান মিম নামে অষ্টম শ্রেনীর এক মাদ্রাসা ছাত্রী। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বুধবার তাকে সংবর্ধিত করা হয়েছে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির আহমেদ, মঠবাড়িয়া সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাখাওয়াত জামিল সৈকত, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলহাজ্ব ডাঃ আলী হাসান, মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাঃ নূরুল ইসলাম বাদল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোঃ বাচ্চু মিয়া আকন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ মোঃ আলমগীর হোসেন, সরকারী হাতেম আলী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুপ কুমার পালসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নুশরাত জাহান মিমের হাতে সম্মামনা ক্রেষ্ট ও নগদ অর্থ তুলে দেয়া হয়েছে। মিম উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের ওয়াহেদাবাদ গ্রামের নূরুন-আলা নূর ইসলামীয়া দাখিল মাদাসার অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী এবং ওই গ্রামের অটোরিক্সা চালক আব্দুর রহমানের মেয়ে। মঠবাড়িয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুপ কুমার পাল জানান, সম্প্রতি নুশরাত জাহান মিম নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকাতে মঠবাড়িয়া থানায় হাজির হন। তার জর্ডান ফেরৎ মা ও অটো চালক বাবা ওই ছাত্রীকে না জানিয়ে বিয়ে ঠিক করেন। ১৩ ডিসেম্বর (সোমবার) বিকেলে পার্শ্ববর্তী ভান্ডারিয়া উপজেলার হরিণপালা গ্রাম থেকে মা-বাবার পছন্দ অনুযায়ী ছেলে পক্ষ দেখতে এসে আংটি পরিয়ে দেয়। এসময় বিষয়টি মাদ্রাসা ছাত্রী নুশরাত জাহান মিম বুঝতে পেরে মা-বাবাকে না জানিয়ে রাতে থানায় হাজির হন। থানা পুলিশ ঘটনাটি আমাকে অবহিত করলে আমি থানায় গিয়ে পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে ওই ছাত্রীর মা-বাবাকে ডেকে এনে মুসলেকা গ্রহণ করি। এসময় তারা পূর্ণ বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়ে বিয়ে দিবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দেন। নুশরাত এমন সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে সর্ব মহলে প্রশংসিত হয়েছেন। নুশরাত জাহান মিম এর সাহসী কাজের প্রশংসা করে মঠবাড়িয়া থানার ওসি মুহা. নূরুল ইসলাম বাদল বলেন, এভাবেই সকল শিক্ষার্থী বাল্য বিবাহ বন্ধ করলে বাল্য বিয়ে শূন্যের কোটায় নিয়ে যেতে পারে। নুশরাত জানান, আমি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই। পড়াশোনা শেষ করে নিজে কিছু করতে চাই। তাছাড়া বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে আমি পাঠ্যবইয়ে পড়েছি। স্যারেরা ক্লাশে সব সময় বাল্যবিবাহ না করার পরামর্শ দেন। পড়াশোনা শেষ না করে বিয়ে করতে যাচ্ছিনা।