ষ্টাফ রিপোর্টারঃ ময়মনসিংহের ভালুকায় প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাচ্ছে একের পর এক সরকারী খাল বিল ও জলাশয়। আর এসব দখলের পর প্রকাশ্যে মাটি ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। সম্প্রতি উপজেলার কাঠালী এলাকায় ধোপাজানের খাল ও বেইত্যাগুনি খালটি দখলে নিয়ে মাটি ভরাটের পর স্থাপনা নির্মাণ করছে প্রভাবশালীরা। সংশ্লিষ্ট বিভাগ এসব দখলের ব্যাপারে দৃশ্যমান আইনী কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ফসলহানিসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ হুমকীর সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন খোঁজ নিয়ে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পশ্চিম পাশে উপজেলার কাঠালী গ্রামে আর্টি কম্পোজিট ডায়িং ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ ওই এলাকার অতি গুরুত্বপূর্ণ ধোপাজান খালটি বাহির অংশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মাটি ভরাট করে নি:শ্চিহৃ করে ফেলেছেন। এতে উজান এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ফসলহানীসহ স্থানীয়দের চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে বেশ কয়েক বছর পূর্বে ভালুকা-মল্লিকবাড়ি সড়কে বেইত্যাগুনি খালটির দুইপাড় দখলে নিয়ে বাটারফ্লাই কোম্পানী তাদের বিশাল স্থাপনা নির্মাণ করেছে। ফলে উজান এলাকায় জলাবদ্ধাতা দেখা দিয়ে প্রতিবছরই শত শত একর ফসলের ক্ষতিসহ খাল বিল পাড়ের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে উপজেলার হবিরবাড়ি ও পাড়াাঁগাও এলাকায় লাউতি খালটির অনেক অংশ দখল ও ভরাট করে এ্যাক্সিল্যান্ড টাইলস এন্ড সিরামিক্স কোম্পানী স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। ভালুকা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড গজারিয়া খালটি স্থানীয় গেøারী ডায়িং ফ্যাক্টরী ও বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী দখলে নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। তাছাড়া পৌরএলাকাসহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দু’পাশে একের পর এক জলাশয় ভরাট করে সংশ্লিষ্টি প্রশাসনের নাকের ঢগায় বিভিন্ন ধরণের স্থাপনা নির্মাণ করে চলেছেন বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও প্রভাবশালীরা। নদী,খাল-বিল ও জলাশয় দখল ও ভরাটের বিরুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করলেও কার্যত কোন প্রদক্ষেপ দৃশ্যমান চোখে পড়ছেনা। ফলে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন খালের উপর নির্মিত ব্রিজগুলো জনসাধারনের কোন কাজে আসছেনা।
বাংলাদেশের পরিবেশ বিষয় সংগঠন বাপার ভালুকা অঞ্চিলিক শাখার সদস্য সচীব কামরুল হাসান পাঠান কামাল বলেন, ভালুকার নদী ও খাল বিল রক্ষায় ইতোপূর্বে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। আশা করবো সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
খাল দখলের ব্যাপারে আর্টি কম্পোজিট ডায়িং ফ্যাক্টরীর অ্যাডমিন ম্যানেজার আল আমীন জানান, খালের নিচে কালভার্ট স্থাপন করে মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। উজানের পানি নিষ্কাশনে কোন সমস্যা হবেনা।
ভালুকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারী জানান, খাল দখলের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সত্যতা পাওয়া গেলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।