আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস
- আপলোড সময়: ১১:৩২:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
- / ৩১৩ বার পড়া হয়েছে
সফিউল্লাহ আনসারী:- সারা বিশ্বে সকল নাগরিকের জন্য তথ্য অধিকার নিশ্চিত করতে প্রতি বছর ২৮ অক্টোবর পালিত হয় আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস। স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশেও এ দিবসটি পালিত হয়। একটা দেশের শাসন ব্যবস্থায় আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা একটি আদর্শ ও কল্যাণ রাষ্ট্রের জন্য জরুরি। তথ্য প্রাপ্তির অধিকার বাক-স্বাধীনতার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে পরগনিত। তথ্য অধিকারকে জনগণের ক্ষমতায়নের একটি মাধ্যম হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।
অবাধ তথ্য প্রবাহ না থাকলে জনগণের মৌল মানবিক অধিকার আদায় অসম্ভব। তাই ব্যক্তির অধিকার আদায়ে তথ্য অধিকার দিবসের রয়েছে গুরুত্ব। ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতা নাগরিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে উল্লেখ আছে।’
দেশের জনগণের অধিকারের বাস্তবায়ন, তাদের সামাজিক ক্ষমতায়নের দ্বারা সরকারি-বেসরকারি সকল স্তরের প্রতিষ্ঠানের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করে অবাধ তথ্য প্রবাহ সৃষ্টি করা যায়। গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে তথ্য প্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি করা আবশ্যক। তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ দেশের জনগণের দীর্ঘদিনের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করেছে।
‘২০ অক্টোবর, ২০০৮ তারিখে ‘তথ্য অধিকার অধ্যাদেশ, ২০০৮’ জারি করা হয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকার ‘তথ্য অধিকার অধ্যাদেশ, ২০০৮’-কে আইনে পরিণত করার উদ্যোগ নেয় এবং ৯ম জাতীয় সংসদের ১ম অধিবেশনে যে কয়টি অধ্যাদেশ আইনে পরিণত হয় তার মধ্যে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ অন্যতম। উক্ত অধিবেশনে ২৯ মার্চ, ২০০৯ তারিখে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ পাস হয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ৫ এপ্রিল, ২০০৯ তারিখে এ আইনটিতে সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেন এবং ৬ এপ্রিল, ২০০৯ তারিখে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়।’ (সংগৃহীত)
তথ্য অধিকার আইন খুব সহজেই প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়, কারণ এ বিষয়টিকে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন হয়েছে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করাসহ মানুষের মধ্যে এই আইনের প্রায়োগের বিষয় সমপর্কে জ্ঞান লাভ এবং তথ্য অধিকার বিষয়ে প্রচার ও প্রসারকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়া। আমাদের দেশের জনগণকে তথ্য অধিকারের সুফল পেতে ব্যাপকভাবে এ আইনটি সমপর্কে জানতে হবে, মানতে হবে সঠিক প্রয়োগের বিষয়গুলো। তথ্য অধিকার সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত হয়ে আইনের প্রয়োগ সম্পর্কে নিজেদের ক্ষমতায়নের পথ সুগম করতে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে এগিয়ে আসতে হবে।
তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সরকারি মহলে হলেও সমাজের অন্যান্য অংশ যেমন বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সচেতন-সুশীল সমাজ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক-অনলাইন সংবাদ মাধ্যম, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, এনজিও কর্তাব্যক্তি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সদিচ্ছা ও বাস্তবায়ন জরুরি। সর্বোপরি যার যার অবস্থান থেকে সর্বস্তরের জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ জরুরি। সঠিক চিন্তা ও চেতনার সম্মিলনে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হোক জনগণের তথ্য প্রাপ্তি।লেখকঃ- কবি,সাংবাদিক