শ্রীপুরে পাঁচ লাখ টাকায় শিশু সন্তান বিক্রি, বাবার মামলায় মা গ্রেপ্তার, শিশু উদ্ধার

- আপলোড সময়: ১১:৪০:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
- / ২৮৮ বার পড়া হয়েছে

টি.আই সানি,নিজস্ব প্রতিনিধি গাজীপুর: পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে নিজের ঔরশজাত ৮ মাসের শিশু সন্তান জান্নাতুল ফেরদৌসকে বিক্রির অভিযোগে বাবার মামলায় মা শামীমা আক্তার (২৪) এবং অপর আসামী নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ। শামীমা বগুড়া সদর উপজেলার নামুজা পাল্লাপাড়া এলাকার শাহীন মিয়ার মেয়ে। সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টায় শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অঙ্কুর কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার অপর আসামী নুরুজ্জামান (৪৫) নরসিংদীর পলাশ উপজেলার কাজীরচর গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার ছেলে। এসময় তার কাছ থেকে ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। মামলার অপর আসামি ফজিলা বিবি (৪৫) পলাতক রয়েছে। আসামী নুজ্জামান শিশুর মা’র কাছ থেকে ষ্ট্যাম্প (দলিল) করে শিশু জান্নাতুল ফেরদৌসকে পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে কিনে নেয়। মামলার বাদী শিশু জান্নাতুল ফেরদৌসের বাবা জাহিদুল ইসলাম গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের কর্ণপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। বাবা জাহিদুল ইসলাম জানান, শামীমা আক্তারের সাথে কোন এক ঘটনাক্রমে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে ২০১৯ সালে তারা উভয়ের সম্মতিতে বিয়ে করেন। তাদের প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি জাহিদুলের শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি। বিয়ের পর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তাদের ঘর আলো করে মেয়ে জান্নাতুল ফেদৌসের জন্ম হয়। শিশুর ৬ মাস বয়স হলে সে জীবিকার তাগিদে চাকুরীর জন্য নরসিংদীতে চলে যান বাবা জাহিদুল ইসলাম। গত ১২জুন মেয়ে জান্নাতুল ফেদৌসকে নিয়ে তার স্ত্রী বাড়ী থেকে বের হয়ে চলে গিয়ে মুঠোফোন বন্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে নরসিংদী থেকে বাড়ীতে এসে স্ত্রী ও মেয়েকে খোঁজাখুজি করতে থাকে জাহিদুল ইসলাম। দুই মাস সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে গাজীপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত শ্রীপুর থানা পুলিশকে অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলে শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) মানব পাচার দমন আইনে মামলা রুজু করে। তাঁর অনুপস্থিতিতে সম্পর্ক ভাঙ্গতেই স্ত্রীর পরিাবারের লোকজনের পরামর্শে তার শিশু সন্তান জান্নাতুল ফেরদৌসকে বিক্রি করার পরিকল্পনা করে এবং ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নুরুজ্জামানের স্ত্রী জানান, শিশু জান্নাতুল ফেরদৌসকে নিয়ে তার মা শামীমা হোটেলে কাজ করার সময় শিশুর কান্না শুনে আমার স্বামী সহায়তার হাত বাড়ায়। এক পর্যায়ে পাঁচ লাখ টাকায় লিখিত ষ্ট্যাম্প (দলিল) করে শিশুকে আমাদের কাছে বিক্রি করে দেয়। আমাদের ১৬ বছরের দাম্পত্য জীবনে কোনো সন্তান হয়নি। আমার স্বামী নিরপরাধ। শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) অঙ্কুর কুমার বলেন, মামলা রুজু হওয়ার পর ভিকটিম শিশু জান্নাতুল ফেরদৌসের বাবাকে সাথে নিয়ে গত রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে নরসিংদী পলাশ উপজেলার কাজীরচর গ্রামের আসামীর নিজ বাড়ী থেকে তাকে গ্রেপ্তার এবং তার কাছ থেকে শিশুকে উদ্ধার করা হয়। এ খবর শুনে শিশুর মা শামীমা আক্তার বগুড়া থেকে শ্রীপুর আসলে সোর্সের মাধ্যমে খবর পেয়ে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে শ্রীপুর বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন দুপুরে আদালতের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃতদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।