শাহজাহান সরকার,পাবনা প্রতিনিধিঃ নলকূপ বসাতে গিয়ে পাইপ দিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাস বের হওয়ার খবর পেয়ে বেড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জায়গাটিতে লাল পতাকা সহ খুঁটি পুঁতে সংরক্ষিত এলাকা করে রাখেন। বুধবার পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা গ্রামে এঘটনা ঘটে। নলকূপের পাইপ দিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাস বের হচ্ছে। বুধবার ১ সেপ্টেমবর  দুপুরের দিকে উপজেলার চাকলা গ্রামের একটি বসতবাড়িতে নলকূপ বসাতে গেলে এ প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। বের হওয়া প্রাকৃতিক গ্যাসে আগুন জ্বলছে। এ দৃশ্য দেখতে এলাকার শত শত মানুষ সেখানে গিয়ে ভিড় করছেন। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার চাকলা পূর্বপড়া গ্রামের মিন্টু শেখের (৩৫) বাড়িতে বেলা ১১টার দিকে কয়েকজন মিস্ত্রি নলকূপ বসাতে আসেন। নলকূপ বসানোর সময় মিস্ত্রিরা ৩০ ফুট বোরিং (গর্ত করা) করতেই মাটির নিচে শক্ত কিছুর অস্তিত্ব পান। একপর্যায়ে পাইপ দিয়ে গ্যাস বের হওয়ার শব্দ হতে থাকে। এ সময় পাইপের মুখে লাইটার জ্বালালে আগুন ধরে যায়। পরে মিস্ত্রিরা দ্রুত সেখান থেকে পাইপ উঠিয়ে বাড়ির আরেক দিকে আবার নলকূপ বসানোর কাজ শুরু করেন। কিন্তু সেখানেও ৩৫ ফুট বোরিং করার পর একই ঘটনা ঘটে। প্রথম স্থানের চেয়ে দ্বিতীয় স্থানে গ্যাস বের হওয়ার শব্দ ও আগুনের তীব্রতা আরও বেশি দেখা যায়। এ অবস্থায় নলকূপ বসাতে আসা লোকজন ভয় পেয়ে আগুন নিভিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। পরে বাড়ির লোকজনের মধ্যে এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে তাঁরা বেড়া ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাল পতাকা টাঙিয়ে দড়ি দিয়ে ঘিরে দেন। মিস্ত্রিরা ৩০ ফুট বোরিং করতেই মাটির নিচে শক্ত কিছুর অস্তিত্ব পান। একপর্যায়ে পাইপ দিয়ে গ্যাস বের হওয়ার শব্দ হতে থাকে। এ সময় পাইপের মুখে লাইটার জ্বালালে আগুন ধরে যায়।বাড়ির মালিক মিন্টু শেখ বলেন, কিছুদিন আগে তিনি ওই স্থানে বাড়ি করার জন্য জায়গা কিনে ঘর তোলেন। এরপর আজ বাড়িতে নলকূপ বসাতে গেলে এ বিপত্তি ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে বাড়ির সবাই প্রচণ্ড আতঙ্কে রয়েছেন বলে তিনি জানান।বেড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ আবদুল আউয়াল বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাস বের হওয়ার আলামত দেখতে পাই। দুটি জায়গাতেই আমরা চারটি করে খুঁটি পুঁতে ঘিরে দিয়েছি। বিষয়টি আমি ইউএনও মহোদয়কে ফোনে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহা. সবুর আলী বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় জায়গাটি আপাতত সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মনজুর কাদের মহিলা কলেজের ভূগোল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব অংশ প্রাকৃতিক গ্যাসে সমৃদ্ধ। কিন্তু সেই তুলনায় দেশের মধ্যবর্তী এই পাবনা এলাকায় গ্যাসক্ষেত্র থাকার কোনো প্রমাণ এখনো মেলেনি। এরপরও ওই এলাকায় নলকূপের পাইপ দিয়ে গ্যাস বের হওয়ার বিষয়টিকে সরকারের তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত।