ময়মনসিংহ ১০:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালুকায় ধোপাজান খাল উদ্ধারের তৎপরতা নেই প্রশাসনের

দৈনিক মুক্তকণ্ঠ
  • আপলোড সময়: ০৪:০৫:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অগাস্ট ২০২১
  • / ৯০১ বার পড়া হয়েছে

খলিলুর রহমান: ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার কাঠালী মৌজার ২৬৭ নং দাগের সরকারী ধোপাজান খাল উদ্ধারের জন্য গ্রামবাসী বার বার প্রশাসনের কাছে আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাননি। সরকারী ধোপাজান খাল নিয়ে সৃষ্ট বিবাদে দুটি পা হারান আর্টি কম্পোজিট মিলের এমডি শিল্পপতি আব্দুর রাজ্জাক। ওই ঘটনায় ভালুকা উপজেলার শিল্প কারখানার মালিক ও ব্যাবস্থাপনা পরিচালকদের মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সচেতন মহল মনে করেন, সরকারী ধোপাজান খালটি জসিম পাঠানদের অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার হলে একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতির পা হারাতে হতো না। প্রশ্ন উঠেছে একজন শিল্পপতি তাঁর দুটি পা হারিয়ে সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হওয়ার দায় কে নেবে? এক সময়ের খরস্রোতা ধোপাজান খালটি দখলের ফলে এখন সরু নালা। ধোপাজান খালের উত্তর-পূর্ব ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পশ্চিম পাশে প্রায় বিশ বছর পূর্বে কাঠালী মৌজার ২৬৮ নং দাগে স্থাপিত হয় আর্টি কম্পোজিট ডাইং মিল। জসিম পাঠান গংরা ধোপাজান খালটি অবৈধ ভাবে দখল করে ফেলায় উজানের পানিসহ আর্টি কম্পোজিট মিলের বর্জ্য ও পানি নিষ্কাশনে চরম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। উজানের পানি ও আর্টি কম্পোজিট মিলের বর্জ্য ও পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ ধোপাজান খাল। সরকারী ধোপাজান খালটি উদ্ধারের জন্য ২৪-নভেম্বর-২০১৯ইং স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে মজিব হোসেন ও বিল্লাল হোসেন গংরা ভালুকা সহকারী কমিশনার ভূমি বরাবর একটি আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে খালটি চিহ্নিত করবার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে সার্ভেয়ার সেলিম হাসান ও সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলাম ভালুকা সহকারী কমিশনার ভূমি বরাবর দুটি প্রতিবেদনে স্পষ্ট উল্লেখ্য করেন সরকারী ধোপাজান খালটি জসিম পাঠান অবৈধভাবে দখল করে আছেন। সরকারী ধোপাজান খালটি উদ্ধারের জন্য একটি মামলায় ময়মনসিংহের বিজ্ঞ সিনিয়ন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশ প্রাপ্ত হয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মাইন উদ্দিন কর্তৃক দাখিল কৃত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ২৬৭ দাগে সরকারী ধোপাজান খাল ও ২৬৮নং দাগের কিছু জমি জসিম পাঠানের দখলে থাকায় খালটি তার গতিপথ পরিবর্তন করে ২৬৮নং দাগে প্রবাহিত হচ্ছে। ৩-১০-২০২০ ইং সনে খালটি উদ্ধারের জন্য শিল্পপতি আব্দুর রাজ্জাক নিজে ভালুকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবরে একটি আবেদন করেন। এতোসবের পরেও রহস্যজনক কারনে সরকারী ধোপাজান খালটি উদ্ধার হচ্ছেনা। স্পষ্ট হয়ে উঠছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অবহেলা ও উদাসিনতা। অবৈধ দখলে থাকা সরকারী ধোপাজান খাল উদ্ধার না হওয়া ও একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতির দুটি পা তার দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়ে পরার দায় কে নিবে? প্রশ্ন উঠেছে সরকারী ধোপাজান খালটি উদ্ধার না হওয়ার দায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এড়িয়ে যেতে পারেন কি না? উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, নকশা মূলে সীমানা চিহ্নিত করে সরকারী ধোপাজান খালটি উদ্ধার ও দখলমুক্ত করা হবে। সরকারী ধোপাজান খাল নিয়ে সৃষ্ট বিবাদে শিল্পপতি আব্দুর রাজ্জাক পা হারানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা, ভালুকা আঞ্চলিক শাখার সদস্য সচিব সাংবাদিক কামরুল হাসান পাঠান বলেন, জরুরী ভিত্তিতে জনস্বার্থে সরকারী ধোপাজান খালসহ বেদখল হওয়া অন্যান্য সরকারী খাল উদ্ধার ও তার স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনতে জেলা প্রশাসক, ময়মনসিংহ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। ভালুকা সিনিয়র সোসাইটির পক্ষ থেকে ধোপাজান খালসহ ভালুকার সরকারী খাল গুলী উদ্ধারের জন্য কর্তৃপক্ষ নিকট জোর দাবী জানান আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান।

ট্যাগস :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

ভালুকায় ধোপাজান খাল উদ্ধারের তৎপরতা নেই প্রশাসনের

আপলোড সময়: ০৪:০৫:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অগাস্ট ২০২১

খলিলুর রহমান: ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার কাঠালী মৌজার ২৬৭ নং দাগের সরকারী ধোপাজান খাল উদ্ধারের জন্য গ্রামবাসী বার বার প্রশাসনের কাছে আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাননি। সরকারী ধোপাজান খাল নিয়ে সৃষ্ট বিবাদে দুটি পা হারান আর্টি কম্পোজিট মিলের এমডি শিল্পপতি আব্দুর রাজ্জাক। ওই ঘটনায় ভালুকা উপজেলার শিল্প কারখানার মালিক ও ব্যাবস্থাপনা পরিচালকদের মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সচেতন মহল মনে করেন, সরকারী ধোপাজান খালটি জসিম পাঠানদের অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার হলে একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতির পা হারাতে হতো না। প্রশ্ন উঠেছে একজন শিল্পপতি তাঁর দুটি পা হারিয়ে সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হওয়ার দায় কে নেবে? এক সময়ের খরস্রোতা ধোপাজান খালটি দখলের ফলে এখন সরু নালা। ধোপাজান খালের উত্তর-পূর্ব ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পশ্চিম পাশে প্রায় বিশ বছর পূর্বে কাঠালী মৌজার ২৬৮ নং দাগে স্থাপিত হয় আর্টি কম্পোজিট ডাইং মিল। জসিম পাঠান গংরা ধোপাজান খালটি অবৈধ ভাবে দখল করে ফেলায় উজানের পানিসহ আর্টি কম্পোজিট মিলের বর্জ্য ও পানি নিষ্কাশনে চরম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। উজানের পানি ও আর্টি কম্পোজিট মিলের বর্জ্য ও পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ ধোপাজান খাল। সরকারী ধোপাজান খালটি উদ্ধারের জন্য ২৪-নভেম্বর-২০১৯ইং স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে মজিব হোসেন ও বিল্লাল হোসেন গংরা ভালুকা সহকারী কমিশনার ভূমি বরাবর একটি আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে খালটি চিহ্নিত করবার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে সার্ভেয়ার সেলিম হাসান ও সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলাম ভালুকা সহকারী কমিশনার ভূমি বরাবর দুটি প্রতিবেদনে স্পষ্ট উল্লেখ্য করেন সরকারী ধোপাজান খালটি জসিম পাঠান অবৈধভাবে দখল করে আছেন। সরকারী ধোপাজান খালটি উদ্ধারের জন্য একটি মামলায় ময়মনসিংহের বিজ্ঞ সিনিয়ন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশ প্রাপ্ত হয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মাইন উদ্দিন কর্তৃক দাখিল কৃত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ২৬৭ দাগে সরকারী ধোপাজান খাল ও ২৬৮নং দাগের কিছু জমি জসিম পাঠানের দখলে থাকায় খালটি তার গতিপথ পরিবর্তন করে ২৬৮নং দাগে প্রবাহিত হচ্ছে। ৩-১০-২০২০ ইং সনে খালটি উদ্ধারের জন্য শিল্পপতি আব্দুর রাজ্জাক নিজে ভালুকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবরে একটি আবেদন করেন। এতোসবের পরেও রহস্যজনক কারনে সরকারী ধোপাজান খালটি উদ্ধার হচ্ছেনা। স্পষ্ট হয়ে উঠছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অবহেলা ও উদাসিনতা। অবৈধ দখলে থাকা সরকারী ধোপাজান খাল উদ্ধার না হওয়া ও একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতির দুটি পা তার দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়ে পরার দায় কে নিবে? প্রশ্ন উঠেছে সরকারী ধোপাজান খালটি উদ্ধার না হওয়ার দায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এড়িয়ে যেতে পারেন কি না? উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, নকশা মূলে সীমানা চিহ্নিত করে সরকারী ধোপাজান খালটি উদ্ধার ও দখলমুক্ত করা হবে। সরকারী ধোপাজান খাল নিয়ে সৃষ্ট বিবাদে শিল্পপতি আব্দুর রাজ্জাক পা হারানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা, ভালুকা আঞ্চলিক শাখার সদস্য সচিব সাংবাদিক কামরুল হাসান পাঠান বলেন, জরুরী ভিত্তিতে জনস্বার্থে সরকারী ধোপাজান খালসহ বেদখল হওয়া অন্যান্য সরকারী খাল উদ্ধার ও তার স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনতে জেলা প্রশাসক, ময়মনসিংহ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। ভালুকা সিনিয়র সোসাইটির পক্ষ থেকে ধোপাজান খালসহ ভালুকার সরকারী খাল গুলী উদ্ধারের জন্য কর্তৃপক্ষ নিকট জোর দাবী জানান আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান।