ময়মনসিংহ ০২:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চকরিয়ায় বন্যার তাণ্ডবে রাস্তাঘাট, বেঁড়িবাধ ও বসতীর ব্যাপক ক্ষতি

দৈনিক মুক্তকণ্ঠ
  • আপলোড সময়: ১১:১৭:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অগাস্ট ২০২১
  • / ৩২৯ বার পড়া হয়েছে

আবদুল মজিদ,চকরিয়া (কক্সবাজার)প্রতিনিধি: অভিরাম বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে কক্সবাজারের চকরিয়ায় স্বরণকালের ভয়াবহ বন্যার প্রাদুর্ভাব ঘটে। এই অবস্থায় গত সাতদিন ধরে উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা জনপদে ৬ লাখের মধ্যে প্রায় চার লাখ মানুষ ছিল পানিবন্দি। তবে লোকালয় থেকে পানি নেমে গেলেও নানা দূর্ভোগে পড়েন বানবাসি মানুষ। অভ্যন্তরীণ সড়ক সমূহ যান চলাচলের অনুপোযুগী হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র ও রাস্তার ধারে আশ্রয় নেয়া লোকজন বাড়িতে ফিরেছে। বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটে পড়েছে বন্যা কবলিত মানুষ। নলকূপগুলো কয়েকদির ধরে পানিতে ডুবে থাকায় পানি উঠছে না। ভেসে উঠছে সড়কের ক্ষত চিহ্ন। সরেজমিনে দেখা গেছে, টানা ভারি বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদীর বানের পানির স্রোতে প্রভাবে বন্যায় উপজেলা স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) বিভাগের ৩০ কিলোমিটার, সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের ২০ কিলোমিটার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর (পিআইও) বিভাগের অধীন ১৮টি ইউনিয়নে প্রায় একশ কিলোমিটার সড়ক কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে একাধিক গ্রামীন সড়ক দেখতে গিয়ে দেখা গেছে বন্যার পানি সরে যাওয়ায় এখন ভেসে উঠছে সড়কের ক্ষত চিহ্ন।একই সঙ্গে বন্যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৬০ মিটার বেঁড়িবাধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সবমিলিয়ে বন্যার তাণ্ডবে চকরিয়া উপজেলা জুড়ে সড়ক ও বেড়িবাধের প্রায় শতকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। বন্যার তাণ্ডবে উপজেলার ১ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে অবস্থিত ২৫২টি চিংড়িঘের প্লাবিত হয়েছে। এতে ১৯ কোটি ১২ লাখ টাকার ৩৮২ মেট্রিক টন চিংড়ি ভেসে গেছে। পাশাপাশি ভারী বর্ষণে উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় ৭১২ হেক্টর আউশ, ৩৮০ হেক্টর আমনের বীজতলা, ৬৪৮ হেক্টর রোপা আমন ও ২৫৫ হেক্টর সবজিখেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অপরদিকে, বন্যায় দূর্গত মানুষের চিকিৎসা সহায়তায় চকরিয়ার উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার জন্য মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে ডায়রিয়া, আমাশয়, জ্বরসহ পানিবাহিত নানা রোগব্যাধি। এছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে থেকেও বিশেষ ব্যবস্থায় দুর্গতদের দেয়া হচ্ছে চিকিৎসা সেবা বলে নিশ্চিত করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তা ডা: মোহাম্মদুল হক।চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন,বন্যায় ঘর হারানো পরিবার ও ভেঙ্গে যাওয়া সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে যোগাযোগ সচলে অগ্রধিকার দেয়া হবে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রণয়ন করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দপ্তরে জানানো হয়েছে। চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলুল করিম সাঈদী জানান, টানা ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে অসংখ্য ঘর-বাড়িসহ রাস্তাঘাট। বানবাসি মানুষ খুব কষ্টে আছেন। সরকারীভাবে ও বেসরকারী উদ্যোগে যে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়ে চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে।

ট্যাগস :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

চকরিয়ায় বন্যার তাণ্ডবে রাস্তাঘাট, বেঁড়িবাধ ও বসতীর ব্যাপক ক্ষতি

আপলোড সময়: ১১:১৭:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অগাস্ট ২০২১

আবদুল মজিদ,চকরিয়া (কক্সবাজার)প্রতিনিধি: অভিরাম বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে কক্সবাজারের চকরিয়ায় স্বরণকালের ভয়াবহ বন্যার প্রাদুর্ভাব ঘটে। এই অবস্থায় গত সাতদিন ধরে উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা জনপদে ৬ লাখের মধ্যে প্রায় চার লাখ মানুষ ছিল পানিবন্দি। তবে লোকালয় থেকে পানি নেমে গেলেও নানা দূর্ভোগে পড়েন বানবাসি মানুষ। অভ্যন্তরীণ সড়ক সমূহ যান চলাচলের অনুপোযুগী হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র ও রাস্তার ধারে আশ্রয় নেয়া লোকজন বাড়িতে ফিরেছে। বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটে পড়েছে বন্যা কবলিত মানুষ। নলকূপগুলো কয়েকদির ধরে পানিতে ডুবে থাকায় পানি উঠছে না। ভেসে উঠছে সড়কের ক্ষত চিহ্ন। সরেজমিনে দেখা গেছে, টানা ভারি বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদীর বানের পানির স্রোতে প্রভাবে বন্যায় উপজেলা স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) বিভাগের ৩০ কিলোমিটার, সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের ২০ কিলোমিটার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর (পিআইও) বিভাগের অধীন ১৮টি ইউনিয়নে প্রায় একশ কিলোমিটার সড়ক কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে একাধিক গ্রামীন সড়ক দেখতে গিয়ে দেখা গেছে বন্যার পানি সরে যাওয়ায় এখন ভেসে উঠছে সড়কের ক্ষত চিহ্ন।একই সঙ্গে বন্যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৬০ মিটার বেঁড়িবাধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সবমিলিয়ে বন্যার তাণ্ডবে চকরিয়া উপজেলা জুড়ে সড়ক ও বেড়িবাধের প্রায় শতকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। বন্যার তাণ্ডবে উপজেলার ১ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে অবস্থিত ২৫২টি চিংড়িঘের প্লাবিত হয়েছে। এতে ১৯ কোটি ১২ লাখ টাকার ৩৮২ মেট্রিক টন চিংড়ি ভেসে গেছে। পাশাপাশি ভারী বর্ষণে উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় ৭১২ হেক্টর আউশ, ৩৮০ হেক্টর আমনের বীজতলা, ৬৪৮ হেক্টর রোপা আমন ও ২৫৫ হেক্টর সবজিখেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অপরদিকে, বন্যায় দূর্গত মানুষের চিকিৎসা সহায়তায় চকরিয়ার উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার জন্য মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে ডায়রিয়া, আমাশয়, জ্বরসহ পানিবাহিত নানা রোগব্যাধি। এছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে থেকেও বিশেষ ব্যবস্থায় দুর্গতদের দেয়া হচ্ছে চিকিৎসা সেবা বলে নিশ্চিত করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তা ডা: মোহাম্মদুল হক।চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন,বন্যায় ঘর হারানো পরিবার ও ভেঙ্গে যাওয়া সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে যোগাযোগ সচলে অগ্রধিকার দেয়া হবে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রণয়ন করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দপ্তরে জানানো হয়েছে। চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলুল করিম সাঈদী জানান, টানা ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে অসংখ্য ঘর-বাড়িসহ রাস্তাঘাট। বানবাসি মানুষ খুব কষ্টে আছেন। সরকারীভাবে ও বেসরকারী উদ্যোগে যে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়ে চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে।