ময়মনসিংহ ০২:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা পরিস্থিতি ও ভাবনা।

দৈনিক মুক্তকণ্ঠ
  • আপলোড সময়: ১১:৩০:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ অগাস্ট ২০২১
  • / ৭৫৫ বার পড়া হয়েছে

মোকলেছুর রহমানঃ- আজকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সারা পৃথিবী আতংকিত আক্রান্ত। পৃথিবীর প্রায়ই প্রতিটি দেশ,প্রতিটি জাতি সর্বোপরি প্রতিটি মানুষই আতংকগ্রস্থ। এযাবত প্রায় চল্লিশ লক্ষ মানুষ মারা গেয়েছে, আক্রান্ত হয়ে আছে আরও কয়েক কোটি। এসব নিয়ে আমরা সর্বদা আতংক নিয়ে বেঁচে আছি। কখন যেন কে আক্রান্ত হয়ে মারা যাই। আজ থেকে মাত্র এক বছর সাত মাস মানে ১ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে প্রথম চীনে করোনা সনাক্ত হয়।তারপর থেকেই আক্রান্ত আর মৃত্যু শুরু হয়। কিন্ত মানুষ সেই সৃষ্টির পর থেকেই মৃত্যু বরণ করে আসছে। কত কত যুগ পর পর এমন মহামারি আগেই ছিলো। মানুষ মরবেই এটাই স্বাভাবিক ব্যপার।আজ আমরা নিজের কথা ভাবি, পরিবারের কথা ভাবি, আতংকে থাকি কখন কাকে যেন হারাতে হয়।করোনা ভাইরাস আসলে মানুষের পাপের ফল।  প্রকৃতির সঙ্গে, পৃথিবীর সঙ্গে, মাটির সঙ্গে, পানির সঙ্গে, বৃক্ষের সঙ্গে বা পৃথিবীতে বসবাসরত অন্য প্রাণীদের সঙ্গে শতাব্দীর পর শতাব্দী মানুষ যে অন্যায় করেছে, অবিচার করেছে, করোনা এসে তার প্রতিশোধ নিচ্ছে। এত ছোট একটা অনুজীব, তার কী প্রবল শক্তি! তার কারণে একই সঙ্গে পৃথিবীতে বন্ধ হয়ে গেছে সকল ধর্মের উপাসনালয়। অসহায় মানুষ সৃষ্টিকর্তাকে ডাকারও জায়গা পাচ্ছে না কোথাও।

এই পৃথিবীকে মানুষ তার ক্রীতদাস ভেবেছিল, মনে করেছিল পৃথিবী এবং সমস্ত প্রকৃতির মালিক সে। তাই পৃথিবীর সঙ্গে যেমন খুশি আচরণ করা যাবে। মানুষের লোভ, দম্ভ এবং বিলাসিতার বলি হয়েছে নদী, সমুদ্র, পাহাড় এবং অন্যান্য প্রাণী। পৃথিবী তার প্রতিশোধ নিচ্ছে। কিন্ত আমরা যে দেশে বাস করি, যে দেশকে নিয়ে বড়াই করছি সে দেশ যে নিজেই আক্রান্ত হয়ে গেছে তার খবর নিই না। নিতে পারিনা।
আজ আমরা এক নতুন সমিক্ষার মুখোমুখি।দিনরাত এক করে ফেলি পরিশ্রম করতে করতে। একটু ভালো চলার, জীবনমানের পরিবর্তন আনার জন্য অনবরত সংগ্রাম করে যাই। অথচ জানি না আগামীকাল বাঁচবো কিনা। গত দেড় বছরে লক্ষ লক্ষ মানুষ বেকার হয়ে গেছে। অগণিত মানুষের আয় দারিদ্র সীমার নিচে চলে গেছে। সহায় সম্বল হারিয়ে ভিখারী হয়ে গেছে অনেকেই। চারদিকে মানুষ আজ অসহায় হয়ে পরেছে। মানুষের এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে একশ্রেণীর পূঁজিবাদীরা নিজের আখের গুছিয়েছে ইচ্চে মত।মানুষের দারিদ্রতাকে পূঁজি করে একটা শ্রেণীর মানুষ বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা কামিয়েছে দুহাত ভরে। অথচ ওরাও জানে না জীবন চলার পথ আর কত লম্বা। এখানেই শেষ নাকি আগামীকাল সুর্য দেখতে পারবে ।অর্থনৈতিক বিভাজনে আজ আমরা বিভক্ত । চোখের সামনে আপনার ভাগ্য আরেকজন চুরি করছে অথচ আপনার কিছুই করার নেই। করার থাকলেও চেষ্ট নেই তা প্রতিহত করার।
আসলে সাধারণ জীবন যাপনে এত টাকা কড়ির প্রয়োজন হয়না।যতটা আমরা আশা করি,বা চেষ্টা করি। যাতে করে আমার সন্তান একটু ভালো থাকে। যদি আমার দেশই রোগাক্রান্ত থাকে তাহলে আমি বা আমার সন্তান ভালো থাকবো কি করে? আমরা বর্তমান একটা ক্রান্তিক সময়ে এসে দাঁড়িয়েছি।হয় পিছু হটতে হবে নয়তো প্রতিহত করতে হবে।একবার ভাবুন না প্রতিদিন কতশত লোক মারা যাচ্ছে তারপরও বছর শেষে ভোটার সংখ্যা কিন্ত কমছে না বরং বাড়ছে। সুতরাং সন্তান একজন মারা যাবে আরেকজন তৈরী হবে। কিন্ত দেশ একবার বাসের অযোগ্য হয়ে গেলে, এই বাতাস একবার দুষিত হয়ে গেলে না পারবো আমার অট্টলিকায় বাস করতে না পারবো কুঁড়ে ঘরে থাকতে।আজ আমি বা আমরা পারিপার্শ্বিক যে অস্থায় আছি চল্লিশ বছর বয়সে। একবার ভাবা দরকার আমার সন্তানের জন্য এত মেহনত করছি বৈধ অবৈধ ভাবে টাকার পাহাড় তৈরী করছি কিন্ত আগামী চল্লিশ বছর পর সে এমনই একটা পরিবেশ বা পরিস্থিতিতে থাকতে পারবে কিনা।তাদের জন্য একটা বাস যোগ্য সমাজ তৈরী করে রেখে যেতে পারবো কিনা।তাই উচিত নিজের অস্থান থেকে বাসযোগ্য পরিবেশ গড়ার জন্য,একটি সুস্থ্য পরিবেশ তৈরীতে কাজ করে যাওয়া উচিত প্রতিটি মানুষের।

লেখকঃ- প্রেস মালিক ও লেখক

ট্যাগস :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

করোনা পরিস্থিতি ও ভাবনা।

আপলোড সময়: ১১:৩০:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ অগাস্ট ২০২১

মোকলেছুর রহমানঃ- আজকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সারা পৃথিবী আতংকিত আক্রান্ত। পৃথিবীর প্রায়ই প্রতিটি দেশ,প্রতিটি জাতি সর্বোপরি প্রতিটি মানুষই আতংকগ্রস্থ। এযাবত প্রায় চল্লিশ লক্ষ মানুষ মারা গেয়েছে, আক্রান্ত হয়ে আছে আরও কয়েক কোটি। এসব নিয়ে আমরা সর্বদা আতংক নিয়ে বেঁচে আছি। কখন যেন কে আক্রান্ত হয়ে মারা যাই। আজ থেকে মাত্র এক বছর সাত মাস মানে ১ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে প্রথম চীনে করোনা সনাক্ত হয়।তারপর থেকেই আক্রান্ত আর মৃত্যু শুরু হয়। কিন্ত মানুষ সেই সৃষ্টির পর থেকেই মৃত্যু বরণ করে আসছে। কত কত যুগ পর পর এমন মহামারি আগেই ছিলো। মানুষ মরবেই এটাই স্বাভাবিক ব্যপার।আজ আমরা নিজের কথা ভাবি, পরিবারের কথা ভাবি, আতংকে থাকি কখন কাকে যেন হারাতে হয়।করোনা ভাইরাস আসলে মানুষের পাপের ফল।  প্রকৃতির সঙ্গে, পৃথিবীর সঙ্গে, মাটির সঙ্গে, পানির সঙ্গে, বৃক্ষের সঙ্গে বা পৃথিবীতে বসবাসরত অন্য প্রাণীদের সঙ্গে শতাব্দীর পর শতাব্দী মানুষ যে অন্যায় করেছে, অবিচার করেছে, করোনা এসে তার প্রতিশোধ নিচ্ছে। এত ছোট একটা অনুজীব, তার কী প্রবল শক্তি! তার কারণে একই সঙ্গে পৃথিবীতে বন্ধ হয়ে গেছে সকল ধর্মের উপাসনালয়। অসহায় মানুষ সৃষ্টিকর্তাকে ডাকারও জায়গা পাচ্ছে না কোথাও।

এই পৃথিবীকে মানুষ তার ক্রীতদাস ভেবেছিল, মনে করেছিল পৃথিবী এবং সমস্ত প্রকৃতির মালিক সে। তাই পৃথিবীর সঙ্গে যেমন খুশি আচরণ করা যাবে। মানুষের লোভ, দম্ভ এবং বিলাসিতার বলি হয়েছে নদী, সমুদ্র, পাহাড় এবং অন্যান্য প্রাণী। পৃথিবী তার প্রতিশোধ নিচ্ছে। কিন্ত আমরা যে দেশে বাস করি, যে দেশকে নিয়ে বড়াই করছি সে দেশ যে নিজেই আক্রান্ত হয়ে গেছে তার খবর নিই না। নিতে পারিনা।
আজ আমরা এক নতুন সমিক্ষার মুখোমুখি।দিনরাত এক করে ফেলি পরিশ্রম করতে করতে। একটু ভালো চলার, জীবনমানের পরিবর্তন আনার জন্য অনবরত সংগ্রাম করে যাই। অথচ জানি না আগামীকাল বাঁচবো কিনা। গত দেড় বছরে লক্ষ লক্ষ মানুষ বেকার হয়ে গেছে। অগণিত মানুষের আয় দারিদ্র সীমার নিচে চলে গেছে। সহায় সম্বল হারিয়ে ভিখারী হয়ে গেছে অনেকেই। চারদিকে মানুষ আজ অসহায় হয়ে পরেছে। মানুষের এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে একশ্রেণীর পূঁজিবাদীরা নিজের আখের গুছিয়েছে ইচ্চে মত।মানুষের দারিদ্রতাকে পূঁজি করে একটা শ্রেণীর মানুষ বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা কামিয়েছে দুহাত ভরে। অথচ ওরাও জানে না জীবন চলার পথ আর কত লম্বা। এখানেই শেষ নাকি আগামীকাল সুর্য দেখতে পারবে ।অর্থনৈতিক বিভাজনে আজ আমরা বিভক্ত । চোখের সামনে আপনার ভাগ্য আরেকজন চুরি করছে অথচ আপনার কিছুই করার নেই। করার থাকলেও চেষ্ট নেই তা প্রতিহত করার।
আসলে সাধারণ জীবন যাপনে এত টাকা কড়ির প্রয়োজন হয়না।যতটা আমরা আশা করি,বা চেষ্টা করি। যাতে করে আমার সন্তান একটু ভালো থাকে। যদি আমার দেশই রোগাক্রান্ত থাকে তাহলে আমি বা আমার সন্তান ভালো থাকবো কি করে? আমরা বর্তমান একটা ক্রান্তিক সময়ে এসে দাঁড়িয়েছি।হয় পিছু হটতে হবে নয়তো প্রতিহত করতে হবে।একবার ভাবুন না প্রতিদিন কতশত লোক মারা যাচ্ছে তারপরও বছর শেষে ভোটার সংখ্যা কিন্ত কমছে না বরং বাড়ছে। সুতরাং সন্তান একজন মারা যাবে আরেকজন তৈরী হবে। কিন্ত দেশ একবার বাসের অযোগ্য হয়ে গেলে, এই বাতাস একবার দুষিত হয়ে গেলে না পারবো আমার অট্টলিকায় বাস করতে না পারবো কুঁড়ে ঘরে থাকতে।আজ আমি বা আমরা পারিপার্শ্বিক যে অস্থায় আছি চল্লিশ বছর বয়সে। একবার ভাবা দরকার আমার সন্তানের জন্য এত মেহনত করছি বৈধ অবৈধ ভাবে টাকার পাহাড় তৈরী করছি কিন্ত আগামী চল্লিশ বছর পর সে এমনই একটা পরিবেশ বা পরিস্থিতিতে থাকতে পারবে কিনা।তাদের জন্য একটা বাস যোগ্য সমাজ তৈরী করে রেখে যেতে পারবো কিনা।তাই উচিত নিজের অস্থান থেকে বাসযোগ্য পরিবেশ গড়ার জন্য,একটি সুস্থ্য পরিবেশ তৈরীতে কাজ করে যাওয়া উচিত প্রতিটি মানুষের।

লেখকঃ- প্রেস মালিক ও লেখক