মঠবাড়িয়ায় এক বছরেও গ্রেফতার হয়নি চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডারের পলাতক দুই আসামি

- আপলোড সময়: ০১:৩৫:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১
- / ৬৯৮ বার পড়া হয়েছে

শাকিল আহমেদ,পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় চাঞ্চল্যকর অটোচালক আয়নাল হক (৩৫), তার স্ত্রী খুকু মনি (২৫) ও তাদের তিন বছরের একমাত্র মেয়ে আশফিয়া হত্যার এক বছর পার হলেও এখনো গ্রেফতার হয়নি পলাতক দুই আসামি। অলি ওরফে আলী ও তার অজ্ঞাত সহযোগী (নাম জানা যায়নি) গ্রেফতার না হওয়ায় মামলার বাদি ও স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, গত বছরের ৩০ জুলাই গভীর রাতে উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের অটোচালক আয়নাল, তার স্ত্রী ও মেয়েকে ঘরে ঢুকে হত্যা করেছেন আরেক অটোচালক অলি বিশ্বাস ও তার তিন সহযোগী। হত্যাকান্ডের পর আয়নালের ঘরে থাকা টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে পালিয়ে যান অলি ও তার সহযোগীরা।
হত্যাকান্ডের পরের দিন আয়নালের শ্বশুর আবুল কালাম সরদার অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে ক্লু-বিহীন এ ট্রিপল মার্ডারের রহস্য উদঘাটনে যৌথভাবে মাঠে নামে ডিবি, পিবিআই ও সিআইডিসহ পুলিশের পাঁচটি বিভাগ। ঘটনার ৯ দিন পর প্রযুক্তি ব্যবহার করে রহস্য উদঘাটন করে থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা বিভাগ। থানা ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে গত বছরের ৮ আগস্ট রাতে হত্যাকান্ডের মাস্টার মাইন্ড অলি বিশ্বাসকে (৩৮) সাফা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন। এরপর অলির দেয়া তথ্য অনুযায়ী তার সহযোগী রাকিবকেও (২০) ওই রাতে ধানীসাফা গ্রামের বসত বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত অলি উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের মৃত তুজাম্বর আলী বিশ্বাসের ছেলে এবং অপর আসামি রাকিব একই গ্রামের কাওসার বেপারীর ছেলে। গ্রেফতারকৃতরা আদালতের কাছে হত্যাকান্ড জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। গ্রেফতারকৃতদের জবানবন্দি অনুযায়ী, অলি বিশ্বাস, রাকিব, অলি ওরফে আলী ও তার এক সহযোগীসহ চারজন সিঁদ কেটে আয়নালের বসত ঘরে ঢুকে। এ সময় আয়নাল ও তার স্ত্রীকে মারধর করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করেন। মালামাল লুট ও মারধরের সময় আয়নাল তাদেরকে চিনে ফেলেন। এ সময় আয়নাল তাদেরকে অনুনয় করে বলেন, ‘অলি তুই মোরে মারিস না, টাকা পয়সা যা আছে নিয়ে যা।’
এ কথা শুনে তারা পরিকল্পনা করে তাদের মেরে ফেলার। পরে চারজন মিলে আয়নাল, তার স্ত্রী ও মেয়ের হাত বেঁধে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পুলিশ সূত্রে জানাযায়, ঘটনার কিছু আগে অটোচালক আয়নাল স্থানীয় সাফা বন্দর কৃষি ব্যাংক থেকে ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করে বাড়ি ফেরার পথে অলি দেখে ফেলেন। এ ছাড়াও অলি জানতে পারেন আয়নাল এর কিছু দিন পূর্বে গরু বিক্রি করে টাকা ঘরে রেখেছেন এবং তার স্ত্রী খুকু মনি প্রতিবেশীর ঘরে রাখা কিছু স্বর্ণালংকারও ঘরে রেখেছেন। ওই টাকা ও স্বর্ণ লুট করার জন্য গত বছরের ৩০ জুলাই দিবাগত গভীর রাতে আয়নালের ঘরে অলি ও রাকিবসহ চারজন সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে লুট ও হত্যাকান্ড ঘটায়।
মামলার বাদি আবুল কালাম সরদার তার মেয়ে, জামাই ও একমাত্র নাতী হত্যকারী দুই জনকে ওই সময় পুলিশ গ্রেফতার করতে পারলেও একবছরে বাকি দুই আসামি গ্রেপ্তার করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পুলিশ ইচ্ছা করলে এতোদিনে বাকি আসামি গ্রেফতার করতে পারতো। আমরা বাকি দুই আসামিকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহা. নুরুল ইসলাম বাদল জানান, পলাতক দুই হত্যাকারীকে গ্রেফতার করতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।