ময়মনসিংহ ০৯:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মঠবাড়িয়ায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে মাছের ঘের ও ফসলের ব্যপক ক্ষতি

দৈনিক মুক্তকণ্ঠ
  • আপলোড সময়: ০৯:৫১:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মে ২০২১
  • / ৩৮৬ বার পড়া হয়েছে

শাকিল আহমেদ,মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধিঃ ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে বলেশ্বর নদ তীরবর্তী উপকূলীয় উপজেলা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার মূল ভূ-খন্ড থেকে আলাদা দ্বীপ মাঝেরচরের প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অতিরিক্ত পানির চাপে ভেঙ্গে গেছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪/৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদ তীরবর্তী খেতাচিড়া, কচুবাড়িয়া, বড়মাছুয়া, খেজুরবাড়িয়া, ভোলমারাচর, তুষখালী, ছোট মাছুয়া, জানখালী, বেতমোর, উলুবাড়িয়া, সাংড়াইলসহ অন্তত অর্ধশত গ্রামে পানি ঢুকে মাছের ঘেরসহ ফসলী জমির ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানের রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৩৫ হেক্টর ঘেরে চাষকৃত মাছ ও মাছের পোনা ভেসে যাওয়ায় কৃষকদের প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।ঘূর্ণিঝড়ের সময় বলেশ্বরের মাঝেরচরের প্রায় ১৫০ পরিবার সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেন। ঝড় ও জোয়ারের তোড়ে চরের বসতি ও বনাঞ্চল ৫/৬ ফুট পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়লে পরিবারগুলোর রান্না বান্নার জন্য উপজেলা প্রশাসেনর পক্ষ থেকে শুকনো খাবার ও গ্যাসের চুলা পৌঁছে দেয়া হয়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায় কর্মকর্তা মিলন তালুকদার জানান, মাঝেরচরের প্রায় তিন কিলোমিটার বাধ জোয়োরের তোড়ে সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সিডর ও আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ বাধ উচু করে নির্মাণ না করার ফলে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে পুরো চরটি ৬ ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে তাদের মাছের ঘেরসহ ফসলের ক্ষতি ব্যপক হয়েছে। তাছাড়া উপজেলার বড়মাছুয়া ইউনিয়নের লঞ্চঘাট, স্ট্রিমারঘাট এলাকার বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় কৃষিজমি ৩/৪ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। গত আম্ফানে বড়মাছুয়া স্টিমারঘাটের এক কিলোমিটার এলাকার বাধ ভেঙ্গে যায়। পরে বাধ উঁচু না করে পানি উনśয়ন বোর্ড ভাঙন কবলিত এলাকায় শুধু মাত্র বালির বস্তা ফেলে দায়সারা মেরামত করে। ইয়াসের প্রভাবে তাও ধসে গেলে বাঁধ উপচে জোয়ারের প্লাবনে গ্রামের পর গ্রাম জলাব্দ হয়ে পড়ে । ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে বড়মাছুয়া স্টিমারঘাট ও লঞ্চঘাট বাজার চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এছাড়া বিপনś বাধের ওপর বৈদ্যুতিক পিলার গুলো হেলে পড়ে নদী গর্ভে বিলীনের আশংকা রয়েছে।মঠবাড়িয়া পৌর শহরের দক্ষিণ বন্দর এলাকার খাল উপচে জোয়ারের পানি ঢুকে অনেক বাসাবাড়ি তলিয়ে যায়। এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড পিরোজপুর এর উপ সহকারি প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বলেন, বড় মাছুয়া বেড়িবাধে ঝুকিপূর্ণ স্থানে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করার চেস্টা চলছে। এছাড়া খেতাছিড়া কচুবাড়িয়া বাধে জোয়ারের তোরে বাঁধের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ বাধঁগুলো পর্যাক্রমে সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন তালুকদার জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পানি বন্দী লোকজনের মাঝে তাৎক্ষণিক শুকনো খাবার পৌঁছে দেয়া হয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈয়দ নজরুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৩৫ হেক্টর ঘেরে চাষকৃত মাছ ও মাছের পোনা ভেসে যাওয়াসহ অবকাঠামো ক্ষতি হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আকাশ কুমার কুন্ডু জানান, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের তাৎক্ষণিক শুকনো খাবার এবং মাঝেরচরের পরিবার গুলোর রানśার জন্য গ্যাসের সিলিন্ডারসহ চুলা সরবরাহ করা হয়েছে।

ট্যাগস :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

মঠবাড়িয়ায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে মাছের ঘের ও ফসলের ব্যপক ক্ষতি

আপলোড সময়: ০৯:৫১:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মে ২০২১

শাকিল আহমেদ,মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধিঃ ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে বলেশ্বর নদ তীরবর্তী উপকূলীয় উপজেলা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার মূল ভূ-খন্ড থেকে আলাদা দ্বীপ মাঝেরচরের প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অতিরিক্ত পানির চাপে ভেঙ্গে গেছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪/৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদ তীরবর্তী খেতাচিড়া, কচুবাড়িয়া, বড়মাছুয়া, খেজুরবাড়িয়া, ভোলমারাচর, তুষখালী, ছোট মাছুয়া, জানখালী, বেতমোর, উলুবাড়িয়া, সাংড়াইলসহ অন্তত অর্ধশত গ্রামে পানি ঢুকে মাছের ঘেরসহ ফসলী জমির ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানের রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৩৫ হেক্টর ঘেরে চাষকৃত মাছ ও মাছের পোনা ভেসে যাওয়ায় কৃষকদের প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।ঘূর্ণিঝড়ের সময় বলেশ্বরের মাঝেরচরের প্রায় ১৫০ পরিবার সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেন। ঝড় ও জোয়ারের তোড়ে চরের বসতি ও বনাঞ্চল ৫/৬ ফুট পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়লে পরিবারগুলোর রান্না বান্নার জন্য উপজেলা প্রশাসেনর পক্ষ থেকে শুকনো খাবার ও গ্যাসের চুলা পৌঁছে দেয়া হয়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায় কর্মকর্তা মিলন তালুকদার জানান, মাঝেরচরের প্রায় তিন কিলোমিটার বাধ জোয়োরের তোড়ে সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সিডর ও আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ বাধ উচু করে নির্মাণ না করার ফলে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে পুরো চরটি ৬ ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে তাদের মাছের ঘেরসহ ফসলের ক্ষতি ব্যপক হয়েছে। তাছাড়া উপজেলার বড়মাছুয়া ইউনিয়নের লঞ্চঘাট, স্ট্রিমারঘাট এলাকার বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় কৃষিজমি ৩/৪ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। গত আম্ফানে বড়মাছুয়া স্টিমারঘাটের এক কিলোমিটার এলাকার বাধ ভেঙ্গে যায়। পরে বাধ উঁচু না করে পানি উনśয়ন বোর্ড ভাঙন কবলিত এলাকায় শুধু মাত্র বালির বস্তা ফেলে দায়সারা মেরামত করে। ইয়াসের প্রভাবে তাও ধসে গেলে বাঁধ উপচে জোয়ারের প্লাবনে গ্রামের পর গ্রাম জলাব্দ হয়ে পড়ে । ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে বড়মাছুয়া স্টিমারঘাট ও লঞ্চঘাট বাজার চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এছাড়া বিপনś বাধের ওপর বৈদ্যুতিক পিলার গুলো হেলে পড়ে নদী গর্ভে বিলীনের আশংকা রয়েছে।মঠবাড়িয়া পৌর শহরের দক্ষিণ বন্দর এলাকার খাল উপচে জোয়ারের পানি ঢুকে অনেক বাসাবাড়ি তলিয়ে যায়। এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড পিরোজপুর এর উপ সহকারি প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বলেন, বড় মাছুয়া বেড়িবাধে ঝুকিপূর্ণ স্থানে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করার চেস্টা চলছে। এছাড়া খেতাছিড়া কচুবাড়িয়া বাধে জোয়ারের তোরে বাঁধের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ বাধঁগুলো পর্যাক্রমে সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন তালুকদার জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পানি বন্দী লোকজনের মাঝে তাৎক্ষণিক শুকনো খাবার পৌঁছে দেয়া হয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈয়দ নজরুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৩৫ হেক্টর ঘেরে চাষকৃত মাছ ও মাছের পোনা ভেসে যাওয়াসহ অবকাঠামো ক্ষতি হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আকাশ কুমার কুন্ডু জানান, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের তাৎক্ষণিক শুকনো খাবার এবং মাঝেরচরের পরিবার গুলোর রানśার জন্য গ্যাসের সিলিন্ডারসহ চুলা সরবরাহ করা হয়েছে।