ময়মনসিংহ ০১:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মঠবাড়িয়ায় অবৈধ ইটভাটায় কাঠ দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট হুমকির মুখে সুন্দরবন ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি

দৈনিক মুক্তকণ্ঠ
  • আপলোড সময়: ০৮:১৯:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ মে ২০২১
  • / ৩৯২ বার পড়া হয়েছে

শাকিল আহমেদ, মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি: মঠবড়িয়ায় অবৈধ ইট ভাটা ও পাঁজায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর চলছে মহোৎসব । সুন্দরবন রক্ষায় নিষিদ্ধ এলাকাসহ ফসলি জমি, ফলদ ও বনজ বাগান ও ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় এসব অর্ধশতাধিক অবৈধ ইট ভাটা ও পাঁজায় আইনের প্রতি বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে জেলা প্রশাসকের কোন লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কৃষি জমি, ফলদ বাগান, ব্যস্ততম সড়ক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও লোকালয়ে প্রকাশ্যে কাঠ দিয়ে ইট পুড়ছে । এ উপকূলীয় উপজেলার বলেশ্বর নদ তীরবর্তী সাপলেজা ইউনিয়নের সুন্দরবন আওতাভুক্ত সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় ইট ভাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও সাপলেজার বিভিন্ন এলাকার অসাধু মালিকরা অবৈধ ইট ভাটায় নদী ও চরের মাটি ইট তৈরীর কাজে ব্যবহার করে আসছে। এর ফলে নিকটবর্তী সুন্দরবন হুমকির মূখে পড়েছে।সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, উজেলার চরকখালী গ্রামের হক বাজার সংলগ্ন আমন ও সবজি ক্ষেতের ওপর স্থানীয় প্রভাবশালী মোসলেম শরীফের অবৈধ পাঁজায় দীর্ঘদিন কাঠ দিয়ে ইট পুড়তে দেখা গেছে। পাতাকাটা সংযোগ রাস্তার ওপর স্থানীয় সরোয়ার হোসেন মোক্তার দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা সংলগ্ন জমির মাটি কেটে ইট তৈরীর ফলে ওই রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে ফাঁটল দেখা দিয়েছে।স্থানীয় বাসিন্দা ছায়া রানী বেগমের (৪৫) জানান, মোসলেম শরীফ বাড়ির সামনে ফসলি জমিতে অবৈধ পাঁজার আগুনের কালো ধোয়ায় ফলদ ও বনজ বাগান কালো পাতা ঝড়ে পরে ফল নষ্ট হয়ে যায়। শিক্ষক সওকাতুল আলম বলেন, এ অবৈধ পাঁজায় আগুন দিলে পাঁজা সংলগ্ন প্রায় ৩০ একর জমির ইরি ধান, মূগ, সূর্যমূখী ক্ষেত হুমকির মূখে পড়ছে। পাতাকাটার বাসিন্দা বৃদ্ধ রুহুল আমীন ফরাজী (৭০) অভিযোগ করে বলেন, চলাচলের রাস্তাটিতে পাজা মালিক এখানে-সেখানে কাঠ ও ইট ফেলে রাখার কারনে এলাকাবাসীর চলাচলে দারুন ভোগান্তি পোহাতে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাঁজা মালিক জানান, প্রশাসনকে নিয়মিত মাসোহারা দিয়েই তারা ইট পোড়াচ্ছেন। এজন্য প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে। নির্ধারিত টাকা না দিলে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে জরিমানা করা হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত হোসেন বলেন, অবৈধ ভাটা বা পাজার তাপমাত্রায় ফসলের ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় কৃষকরা অভিযোগ করছে।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফেরদৌস ইসলাম বলেন, লোকালয়ের যত্রতত্র কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানের ফলে দীর্ঘ মেয়াদী শ্বাস কষ্ট ও ফুসফুসে সমস্যা তৈরী হয়।জেলা প্রশাসক আবু আলী মো: সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পরিবেশের ক্ষতিকারক অবৈধ ইট ভাটা পাঁজার বিরুদ্ধে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগস :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

মঠবাড়িয়ায় অবৈধ ইটভাটায় কাঠ দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট হুমকির মুখে সুন্দরবন ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি

আপলোড সময়: ০৮:১৯:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ মে ২০২১

শাকিল আহমেদ, মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি: মঠবড়িয়ায় অবৈধ ইট ভাটা ও পাঁজায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর চলছে মহোৎসব । সুন্দরবন রক্ষায় নিষিদ্ধ এলাকাসহ ফসলি জমি, ফলদ ও বনজ বাগান ও ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় এসব অর্ধশতাধিক অবৈধ ইট ভাটা ও পাঁজায় আইনের প্রতি বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে জেলা প্রশাসকের কোন লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কৃষি জমি, ফলদ বাগান, ব্যস্ততম সড়ক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও লোকালয়ে প্রকাশ্যে কাঠ দিয়ে ইট পুড়ছে । এ উপকূলীয় উপজেলার বলেশ্বর নদ তীরবর্তী সাপলেজা ইউনিয়নের সুন্দরবন আওতাভুক্ত সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় ইট ভাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও সাপলেজার বিভিন্ন এলাকার অসাধু মালিকরা অবৈধ ইট ভাটায় নদী ও চরের মাটি ইট তৈরীর কাজে ব্যবহার করে আসছে। এর ফলে নিকটবর্তী সুন্দরবন হুমকির মূখে পড়েছে।সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, উজেলার চরকখালী গ্রামের হক বাজার সংলগ্ন আমন ও সবজি ক্ষেতের ওপর স্থানীয় প্রভাবশালী মোসলেম শরীফের অবৈধ পাঁজায় দীর্ঘদিন কাঠ দিয়ে ইট পুড়তে দেখা গেছে। পাতাকাটা সংযোগ রাস্তার ওপর স্থানীয় সরোয়ার হোসেন মোক্তার দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা সংলগ্ন জমির মাটি কেটে ইট তৈরীর ফলে ওই রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে ফাঁটল দেখা দিয়েছে।স্থানীয় বাসিন্দা ছায়া রানী বেগমের (৪৫) জানান, মোসলেম শরীফ বাড়ির সামনে ফসলি জমিতে অবৈধ পাঁজার আগুনের কালো ধোয়ায় ফলদ ও বনজ বাগান কালো পাতা ঝড়ে পরে ফল নষ্ট হয়ে যায়। শিক্ষক সওকাতুল আলম বলেন, এ অবৈধ পাঁজায় আগুন দিলে পাঁজা সংলগ্ন প্রায় ৩০ একর জমির ইরি ধান, মূগ, সূর্যমূখী ক্ষেত হুমকির মূখে পড়ছে। পাতাকাটার বাসিন্দা বৃদ্ধ রুহুল আমীন ফরাজী (৭০) অভিযোগ করে বলেন, চলাচলের রাস্তাটিতে পাজা মালিক এখানে-সেখানে কাঠ ও ইট ফেলে রাখার কারনে এলাকাবাসীর চলাচলে দারুন ভোগান্তি পোহাতে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাঁজা মালিক জানান, প্রশাসনকে নিয়মিত মাসোহারা দিয়েই তারা ইট পোড়াচ্ছেন। এজন্য প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে। নির্ধারিত টাকা না দিলে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে জরিমানা করা হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত হোসেন বলেন, অবৈধ ভাটা বা পাজার তাপমাত্রায় ফসলের ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় কৃষকরা অভিযোগ করছে।উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফেরদৌস ইসলাম বলেন, লোকালয়ের যত্রতত্র কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানের ফলে দীর্ঘ মেয়াদী শ্বাস কষ্ট ও ফুসফুসে সমস্যা তৈরী হয়।জেলা প্রশাসক আবু আলী মো: সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পরিবেশের ক্ষতিকারক অবৈধ ইট ভাটা পাঁজার বিরুদ্ধে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।