আবদুল মজিদ,চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি: কক্সবাজারের চকরিয়ায় সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে জনহয়রাণী ও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে টানা ৯ঘন্টা ধরে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসময় সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে ঘুষ লেনদেনের নগদ ৬ লাখ ৪২ হাজার ১’শত টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানকালে সাব-রেজিস্ট্রার মো. নাহিদুজ্জামান ও মোহরার দুর্জয় কান্তি পালকে গ্রেপ্তার করে দুদক। বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত দুইজনকে ২এপ্রিল বিকেল ৫টায় চকরিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত সাব রেজিস্ট্রার মো. নাহিদুজ্জামান (৩১) নাটোর জেলার গুরুদাশপুর থানার উত্তর নাড়িবাড়ি এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে ও অফিস মোহরার দুর্জয় কান্তি পাল (৩৮) কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল এলাকার মধুরাম পালের ছেলে। অভিযানের সময় অফিস সহকারী শ্যামল বড়ুয়া দুদকের চোখকে ফাঁকি দিয়ে ছাদের উপর দিয়ে টপকে পালিয়ে যায়। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে অভিযানকালে ৬ লাখ ৪২ হাজার একশত টাকা জব্দ করা হয়েছে।এর মধ্যে সাব রেজিস্ট্রার নাহিদুজ্জামানের ব্যবহৃত স্টিলের লকার থেকে ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৫০ টাকা, অফিস মোহরার দুর্জয় কান্তি পালের ড্রয়ার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও অফিস সহকারি শ্যামল বড়ুয়ার ড্রয়ার থেকে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৫৫০ টাকা রয়েছে। এসব টাকা বৃহস্পতিবার জমি রেজিস্ট্রির সময় অবৈধ লেনদেন করা হয়েছে। এসব টাকার কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তাঁরা। তিনটি ড্রয়ার থেকে ঘুষ লেনদেনের হাতের লেখা ৪১টি স্লিপও জব্দ করা হয়েছে। দুদক কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন আরো বলেন, দুদকের হটলাইনে (১০৬) চকরিয়া সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের এক ভুক্তভোগী ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে অভিযোগ করেন। এরপর দুদকের একটি গোয়েন্দা দল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছদ্মবেশে সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে অবস্থান করেন। দলটি সরেজমিনে ঘুষ লেনদেনের চিত্র দেখে। পরে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে আনুষ্ঠানিক অভিযান শুরু করে রাত তিনটায় অভিযান শেষ করেন। চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের জানান, দুদকের অভিযানে গ্রেফতারকৃত সাবরেজিস্ট্রার মো. নাহিদুজ্জামান ও অফিস মোহরার দুর্জয় কান্তি পাল ও পলাতক অফিস সহকারী কক্সবাজার পৌরসভার মহাজের পাড়ার দীনবন্ধু বড়ুয়ার পুত্র শ্যামল বড়ুয়ার বিরুদ্ধে দুদক এখনো কোন মামলা দায়ের করেনি। তাই ধৃত আসামীদেরকে জব্দকৃত টাকাসহ ৫৪ ধারায় বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ্দ করা হয়েছে। আদালত তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। অপরদিকে, শুক্রবার অফিস বন্ধ থাকায় অভিযুক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে শনিবার অথবা রোববারের মধ্যে মামলা দায়ের করা হবে বলে সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন দুদকের কর্মকর্তা।