টি.আই সানি,নিজস্ব প্রতিনিধি গাজীপুরঃ “শত বাঁধা উপেক্ষা করে, আজ আমরা এমনই ঐতিহাসিক এক মুহূর্তে সাক্ষী, যখন বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করছে। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করার সাথে সাথে বীর বাঙালি সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য অসম এক যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের বিনিময়ে অর্জিত সেই লাল সবুজের পতাকা আজ বিশ্বের বুকে সম্মানের সাথে উড্ডীন। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নে শুক্রবার ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসব কথা বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি’র চেয়ারম্যান, শাহ্সূফি সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী। তবে এ অর্জন মোটেও সহজসাধ্য ছিল না। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধোত্তর সময়ে বৈশ্বিক নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। বিশেষত ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে সামরিক শাসন, রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে দারুণভাবে বাঁধাগ্রস্ত করেছে। ভৌগোলিকভাবেও বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে বার বার। এত সব বাঁধা পেরিয়ে, বাংলাদেশ আজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি রোল মডেল, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস দমন, জীবনমানের উন্নয়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, খাদ্য উৎপাদন, মানবসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিনিয়োগ অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি ও দূর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বৈদেশিক কূটনীতিতেও বাংলাদেশ নিজেদের দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি লাভ করেছে। তাই বাংলাদেশ এখন ভূ-রাজনৈতিকভাবে বিশ্বের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। উন্নত দেশগুলোও বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে বাংলাদেশ শোষকগোষ্ঠী পাকিস্তানের থেকে প্রায় সকল সূচকেই অনেক এগিয়ে। বাংলাদেশ এখন আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভারত, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ার মত দেশের সাথে প্রতিযোগিতা করছে। নিঃসন্দেহে এ অর্জনগুলো সকল বাংলাদেশীর জন্য গর্বের। তবে এ অর্জনকে ধরে রাখতে, দেশের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে এবং অগ্রযাত্রাকে তরান্বিত করতে প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব রয়েছে। যার যার অবস্থান থেকে দেশের মাটি ও মানুষের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যেতে হবে। তবেই আমরা ৩০ লক্ষ শহীদের প্রাণ, ২ লক্ষ মা-বোনের সমভ্রম ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মহান আতœত্যাগের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা জানাতে পারব। দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা-অসহিষ্ণুতা, সামাজিক বৈষম্যের মত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বিষয়গুলোকে পরিহার করে ন্যায়, সাম্য, সুষ্ঠু গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক চর্চায় মনোযোগী হতে হবে। ২৬ শে মার্চ, ২০২১ গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় লহাই বাজারে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করে এসব কথা বলেন সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, মুফতি বাকীবিল্লাহ্ আল আজহারী, হাফেজ মুফতি মাকসুদুর রহমান, মাওলানা রুহুল আমিন ভূইয়া চাঁদপুরী, হাফেজ মওলানা মনসুর আলি মাইজভান্ডারী, স্থানীয় খলিফাবৃন্দ, আঞ্জুমান-এ-রাহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারীয়া ও মইনীয়া যুব ফোরামের নেতৃবৃন্দ।