ময়মনসিংহ ১১:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ত্রিশালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারদিকে পুকুর,জীবনের ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

দৈনিক মুক্তকণ্ঠ
  • আপলোড সময়: ১২:২৪:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ২৯৪ বার পড়া হয়েছে

মোহাম্মদ সেলিম, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ ১৯৬৯ সালে স্থাপিত ওই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সুনামের সঙ্গে শিক্ষাপাঠ পরিচালনা হয়ে আসছিল। এই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আজ দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। বিদ্যালয়টি নানা ধরনের সমস্যার মধ্যেও সফলতার সঙ্গে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে।ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ৬৮নং কোনাবাড়ী জি.সি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির চারপাশে রয়েছে পুকুর। এমন অবস্থায় ঝুঁকিতে ঐতিহ্যবাহী ওই বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। আশপাশের গ্রাম থেকে এখানে পড়াশোনা করতে আসেন কোমলমতিরা। অথচ এ বিদ্যালয়ের চারপাশে পুকুরপাড়। আর বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তাটি পুকুরের পানিতে তলিয়ে গেছে। যে কারণে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। অনেক সময় পুকুর পাড়ের রাস্তায় শিক্ষার্থীরা পড়ে গিয়ে মারাত্মক জখম হয়। বিদ্যালয়ের জমি মৎস্য চাষিদের ফিসারীতে চলে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা ও আগের মতো শরীরচর্চা করতে পারছে না। খেলার কোনো উপকরণ পুকুরে পড়ে গেলে কোমলমতিরা ঝুঁকি নিয়ে পুকুর থেকে তুলে আনে। বিদ্যালয়ের চারপাশে নেই দেয়াল। ফলে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জানায়, ‘আমাদের স্কুলের মাঠ বড় না থাকায় স্কুলের সামনের অল্প জায়গা ও বারান্দায় খেলা করি। অনেক সময় পুকুরে খেলনা পড়ে গেলে সেটা নিয়ে আসি। আবার অনেক সহপাঠী সাঁতার না জানায় ডুবে যাওয়ার ভয়ে খেলনা আনতে যায় না। আবার অনেক সময় বাঁশের লম্বা লাঠি দিয়ে খেলনা তুলে আনার চেষ্টা করি। আমরা অনেকেই সাঁতার জানি না, ভয় লাগে যদি হঠাৎ খেলতে খেলতে পানিতে পড়ে যাই। ’স্থানীয় অভিভাবকরা বলেন, ‘বিদ্যালয়টি অনেক পুরোনো কিন্তু সে অনুয়ায়ী সার্বিক উন্নতি হয়নি। দূর-দূরান্ত থেকে এখানে অনেক কোমলমতি শিশুরা পড়তে আসে। স্কুলের চারদিকে পুকুর, যেকোনো সময় শিশুরা পানিতে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ স্কুলটি সন্তানদের জন্য নিরাপদ নয়, কদিন আগেই দেখলাম পুকুর পাড় ভেঙে গেছে। স্কুলের চারদিকে দেয়াল নেই। এত সমস্যার মাঝে কীভাবে আমাদের ছোট ছোট বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাবো? ’বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক জানান, পুকুরপাড়ের চারদিক দিয়ে শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই, চারদিকে শুধু ফিসারী, ফিসারির পাড়ের রাস্তা দিয়ে শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় অনেক সময় অভিভাবকরা শিশুদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দেন। তিনি আরো বলেন, ‘পুকুর মালিকদের বারবার অনুরোধ করেছি। রাস্তাটি একটু বড় করার উদ্যোগ নিলে স্কুলের যাতায়াত ব্যবস্থা সুন্দর হতো, ছাত্রছাত্রীরা চলাচল করতো নিরাপদভাবে। তারা আমাদের কথাগুলো শুনছেন না বরং স্কুলের জমি তাদের পুকুরের দখলে চলে যাচ্ছে। ’এদিকে এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে জানতাম না। পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’

ট্যাগস :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

ত্রিশালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারদিকে পুকুর,জীবনের ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

আপলোড সময়: ১২:২৪:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১

মোহাম্মদ সেলিম, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ ১৯৬৯ সালে স্থাপিত ওই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সুনামের সঙ্গে শিক্ষাপাঠ পরিচালনা হয়ে আসছিল। এই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আজ দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। বিদ্যালয়টি নানা ধরনের সমস্যার মধ্যেও সফলতার সঙ্গে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে।ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ৬৮নং কোনাবাড়ী জি.সি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির চারপাশে রয়েছে পুকুর। এমন অবস্থায় ঝুঁকিতে ঐতিহ্যবাহী ওই বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। আশপাশের গ্রাম থেকে এখানে পড়াশোনা করতে আসেন কোমলমতিরা। অথচ এ বিদ্যালয়ের চারপাশে পুকুরপাড়। আর বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তাটি পুকুরের পানিতে তলিয়ে গেছে। যে কারণে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। অনেক সময় পুকুর পাড়ের রাস্তায় শিক্ষার্থীরা পড়ে গিয়ে মারাত্মক জখম হয়। বিদ্যালয়ের জমি মৎস্য চাষিদের ফিসারীতে চলে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা ও আগের মতো শরীরচর্চা করতে পারছে না। খেলার কোনো উপকরণ পুকুরে পড়ে গেলে কোমলমতিরা ঝুঁকি নিয়ে পুকুর থেকে তুলে আনে। বিদ্যালয়ের চারপাশে নেই দেয়াল। ফলে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জানায়, ‘আমাদের স্কুলের মাঠ বড় না থাকায় স্কুলের সামনের অল্প জায়গা ও বারান্দায় খেলা করি। অনেক সময় পুকুরে খেলনা পড়ে গেলে সেটা নিয়ে আসি। আবার অনেক সহপাঠী সাঁতার না জানায় ডুবে যাওয়ার ভয়ে খেলনা আনতে যায় না। আবার অনেক সময় বাঁশের লম্বা লাঠি দিয়ে খেলনা তুলে আনার চেষ্টা করি। আমরা অনেকেই সাঁতার জানি না, ভয় লাগে যদি হঠাৎ খেলতে খেলতে পানিতে পড়ে যাই। ’স্থানীয় অভিভাবকরা বলেন, ‘বিদ্যালয়টি অনেক পুরোনো কিন্তু সে অনুয়ায়ী সার্বিক উন্নতি হয়নি। দূর-দূরান্ত থেকে এখানে অনেক কোমলমতি শিশুরা পড়তে আসে। স্কুলের চারদিকে পুকুর, যেকোনো সময় শিশুরা পানিতে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ স্কুলটি সন্তানদের জন্য নিরাপদ নয়, কদিন আগেই দেখলাম পুকুর পাড় ভেঙে গেছে। স্কুলের চারদিকে দেয়াল নেই। এত সমস্যার মাঝে কীভাবে আমাদের ছোট ছোট বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাবো? ’বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক জানান, পুকুরপাড়ের চারদিক দিয়ে শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই, চারদিকে শুধু ফিসারী, ফিসারির পাড়ের রাস্তা দিয়ে শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় অনেক সময় অভিভাবকরা শিশুদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দেন। তিনি আরো বলেন, ‘পুকুর মালিকদের বারবার অনুরোধ করেছি। রাস্তাটি একটু বড় করার উদ্যোগ নিলে স্কুলের যাতায়াত ব্যবস্থা সুন্দর হতো, ছাত্রছাত্রীরা চলাচল করতো নিরাপদভাবে। তারা আমাদের কথাগুলো শুনছেন না বরং স্কুলের জমি তাদের পুকুরের দখলে চলে যাচ্ছে। ’এদিকে এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে জানতাম না। পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’