ছয় মাসেও গ্রেফতার হয়নি মঠবাড়িয়ায় শিশুসহ ট্রিপল মার্ডারের দুই আসামী
- আপলোড সময়: ১২:০৯:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২১
- / ৩৯৮ বার পড়া হয়েছে
শাকিল আহমেদ,মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় তিন বছরের শিশুসহ ট্রিপল মার্ডারের দুই খুনিকে গত ছয় মাসেও গ্রেফতার করতে পারেনি থানা পুলিশ। গত বছরের ৩০ জুলাই উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের অটোচালক আয়নাল হক (৩৫), তার স্ত্রী খুকু মনি (২৫) ও তাদের ৩ বছরের একমাত্র শিশু কন্যা আশফিয়ার হত্যার প্রায় ৬মাস হলেও পলাতক দুই খুনী ওলী ওরফে আলী ও তার অজ্ঞাত নামা সহযোগী এখনো রয়েছে অধরা। যার ফলে মামলার বাদী ও এলাকারাসী মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।জানাগেছে, গত বছরের ৩০ জুলাই গভীর রাতে উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের অটোচালক আয়নাল, তার স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে বসত ঘরে ডুকে অপর অটোচালক অলি বিশ্বাসসহ চার সহযোগী মিলে টাকা ও স্বর্ণ লুটের জন্য পরিকল্পিতভাবে নৃশংস ভাবে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়ে টাকা ও স্বর্ণ লুট করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরের দিন নিহত আয়নালের শ্বশুর উপজেলার চিত্রা পাতাকাটা গ্রামের আবুল কালাম সর্দার অজ্ঞাতনামা আসামী দিয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ট্রিপল মার্ডরের নয় দিন পর বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) যৌথভাবে হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করে ও রহস্য উদঘাটন করে হত্যাকান্ডে জড়িত মাষ্টারমাইন্ড কিলার অলি বিশ্বাস (৩৮) কে সাফা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। এরপর থানা পুলিশ ঘাতক অলির দেয়া তথ্য মতে ও তার সহযোগী রাকিব (২০) কে ওই রাতে ধানীসাফা গ্রামের বসত বাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত ঘাতক অলি উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের মৃত তুজাম্বর আলীর বিশ্বাসের ছেলে ও রাকিব একই গ্রামের কাওসার বেপারীর ছেলে। এদিকে এ হত্যায় সরাসরি জড়িত গ্রেফতারকৃত দুই খুনি পুলিশ ও আদালতের কাছে হত্যায় জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি মূলক জবাবন্দী দেয়। ঘাতকরা দস্যুতার জন্যই সিঁদ কেটে আয়নালের বসত ঘরে প্রবেশ করে আয়নাল ও স্ত্রীকে মারধর করে নগদ টাকা, স্বর্ণসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে। এ সময় আয়নাল একই এলাকার দস্যু ও অটোচালক অলি ও আলীসহ তার সহযোগীদের চিনে ফেলে। পরে চার ঘাতক মিলে আয়নাল ও তার স্ত্রী খুকু ও শিশুটিকে হাঁত বেধে গলায় কাপড় পেছিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে বসত ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, এঘটনার কিছু দিন আগে ধানীসাফা গ্রামের রত্তন হাওলাদারের পুত্র অটোচালক আয়নাল স্থানীয় সাফা বন্দর কৃষি ব্যাংক থেকে ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করে বাড়ি ফেরার পথে ঘাতক অলি দেখে ফেলে। এ ছাড়াও ঘাতক অলি জানতে পারে যে আয়নাল গরু বিক্রি করে টাকা ঘরে গচ্ছিত রেখেছে এবং স্ত্রী খুকু প্রতিবেশীর ঘরে রাখা কিছু স্বর্ণালংকারও ঘরে নিয়ে এসে গচ্ছিত রেখেছে। ওই টাকা ও স্বর্ণ লুট করার জন্য গত ৩০ জুলাই গভীর রাতে ধানীসাফা-মঠবাড়িয়া সড়কের পাশে আয়নালের ভাড়াটিয়া বসত ঘরে ঘাতক অলি ও রাকিবসহ চারজন সিদ কেটে প্রবেশ করে এ লুট ও হত্যাকান্ড ঘটায়। মামলার বাদী আবুল কালাম সর্দার জানান-তার মেয়ে, জামাই ও একমাত্র নাতী হত্যকারী দুই ঘাতক পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আঃ, জাঃ, মোঃ মাসুদুজ্জামান মিলু জানান-পলাতক দুই হত্যাকারীকে গ্রেফতার করতে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে। পিরোজপুরের পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খাঁন জানান, চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডরের দুই আসামীকে গ্রেফতার করতে থানা পুলিশ ও পিরোজপুরের ডিবি পুলিশ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আশাকরি খুব অল্প সময়ের মধ্যে পলাতক দু’ আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হব।