নিরেন দাস,আক্কেলপুর (জয়পুরহাট)প্রতিনিধিঃ খরচ কম আর বেশি লাভ হওয়ায় এবং চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশি ও উন্নত গাড়ল জাতের ভেড়া পালনে আগ্রহ বেড়েছে আক্কেলপুরের খামারিদের। অনেকে সফলতা পেয়েছে, আবার দেশি ও গাড়ল (ভেড়া) পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এলাকার অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকরা। জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে দেশি ও উন্নত গাড়ল জাতের ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছে উপজেলার পৌর সদরের বিহারপুর গ্রামের জামাল মন্ডলের ছেলে মো. ছনি মন্ডল(৩০)। ছনির সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত, ছনি প্রায় ১বছর আগে রাজশাহী জেলায় তার বুন্ধুর বাড়িতে গিয়ে গাড়ল জাতের ভেড়া পালনে উদ্বুদ্ধ হন। পড়ে নাটোর থেকে তিনি ৯ টি গাড়ল ভেড়া ৩০ হাজার টাকায় কিনে বাড়িতে পালন শুরু করেন। এখন তার খামারে ৩০টির অধিক গাড়ল জাতের ভেড়া পালন করছেন তিনি। জয়পুরহাট, নওগাঁ, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলা থেকে খামারিরা এসে তার কাছ থেকে গাড়ল ভেড়া কিনে নিয়ে যায় বলে জানান তিনি। এখন তিনি মাসে ৪০হাজার টাকা আয় করছেন। তার ভালো রোজগার হওয়ায় এখন তার সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে, এখন তিনি স্বাবলম্বী। গাড়ল জাতের ভেড়া পালনেই তার ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে। খামারি ছনি জানান, গাড়ল জাতের ভেড়ার মাংস গন্ধমুক্ত ও সুস্বাদু। পুষ্টি গুণেও ভালো। দেশের উত্তরাঞ্চলের চেয়ে দক্ষিণাঞ্চলে ভেড়ার মাংসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতি কেজি মাংস ৫০০থেকে ৬০০টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। একজন খামারি ২লাখ টাকা বিনিয়োগ করে খরচ বাদে গাড়ল জাতের ভেড়ার খামার থেকে প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। মাঠে ছেড়েদিয়ে প্রাকৃতিক খাবার মাঠের ঘাস, লতাপাতা, খর খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে পালন করা যায়। রোগ বালাই খুব কম। একটি গাড়ল ভেড়া বছরে দুবার, ১থেকে ৩টি বাচ্চা দেয়। তিনি বলেন, বেকার যুবকদের চাকরির পেছনে না ছুটে গাড়ল প্রজাতির ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ার আহ্বান জানান । লাভ জনক হওয়ায় আক্কেলপুর উপজেলায় দিন দিন খামারিরা দেশি ও গাড়ল প্রজাতির ভেড়া পালনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।আক্কেলপুর পৌর সদরের শান্তা গ্রামের খামারি আবু হাসান জানান, গত বছরের নভেম্বর থেকে দেশি প্রজাতির ভেড়া ১২টি ভেড়া পালন শুরু করি। এখন আমার খামারে দেশি ভেড়া ৪০টি রয়েছে। আবু হাসান আরো বলেন, অল্প পুঁজি ও শ্রমে বাণিজ্যিক ভাবে আমি লাভজনক। এ ভেড়া পালনে বাড়ির অন্যান্য কাজের পাশাপাশি ভেড়া পালন করে আমি স্বাবলম্বী। অভাবের সংসারে এসেছে সচ্ছলতা। তাই এখন বাণিজ্যিকভাবে ভেড়া পালন দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আমি মনে করি। আক্কেলপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার ডা. ওয়ালিউল ইসলাম জানান, উপজেলায় প্রায় ৪০টির বেশি দেশি ও গড়াল প্রজাতির ভেড়ার খামার রয়েছে। উপজেলায় দেশি ও গাড়ল প্রজাতির ভেড়া পালন হচ্ছে। তুলনামূলক গৃহ-পালিত অন্য প্রাণীর চেয়ে গাড়লের রোগ বালাই কম হয় এবং দ্রুত মাংস হয়, আবার এর মাংসে চর্বি কম থাকে। লাভ জনক হওয়ায় গাড়ল পালনে অনেকে এগিয়ে আসছে। প্রাণী সম্পদ বিভাগ থেকে গাড়ল ও দেশি প্রজাতির ভেড়া পালনে চিকিৎসা সেবা, পরামর্শ সহ সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে।